রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫,
২৭ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা      নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা      অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল      
জাতীয়
নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ করার দাবি
সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম
প্রকাশ: শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:০৫ পিএম আপডেট: ১১.১০.২০২৫ ৫:২০ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

নোয়াখালীকে পৃথক প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণা করার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকেই ঢাকা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষীপুর জেলা থেকে হাজারো মানুষ ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’— স্লোগান নিয়ে প্রেস ক্লাবের চত্বরে জড়ো হন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী জেলা সমিতির সভাপতি এম খান বেলাল ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাবুদ দুলাল, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি মাহবুবুর রহমান আলো, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন মঞ্চের আহ্বায়ক সময় মুরাদ, ঢাকাস্থ নোয়াখালী সাংবাদিক ফোরামের (এনজেএফ) আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পাদক সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম, দৈনিক আমার দেশের শিফট ইনচার্জ এফআই মাসুদ প্রমুখ। 

এছাড়া, সমাবেশে ঢাকা ও নোয়াখালীর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে। তারা তাদের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন।  

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘প্রশাসনিক বিভাজনের নামে দেশের অন্যান্য এলাকায় নতুন বিভাগ গঠিত হলেও নোয়াখালী অঞ্চল বছরের পর বছর অবহেলিত থেকে গেছে।’

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন মঞ্চ আহ্বায়ক, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ, নোয়াখালী যুব কল্যাণ সংস্থা, সার্ক যুব প্রতিবন্ধী সংস্থা বাংলাদেশ ও বিভিন্ন সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও পোস্টার— যেখানে লেখা ছিল ‘নোয়াখালীর উন্নয়নের জন্য বিভাগ চাই’, ‘আমরা অধিকার চাই, অনুগ্রহ নয়’, ‘দিতে হবে, দিয়ে দাও নোয়াখালী বিভাগ চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই নোয়াখালী বিভাগ চাই, এক দফা দাবি নোয়াখালী বিভাগ চাই’।

বক্তারা আরও বলেন, নোয়াখালী জেলা ও এর আশপাশের ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ পুরো দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল বহু বছর ধরে প্রশাসনিক অবকাঠামোর দিক থেকে পিছিয়ে আছে। সরকারি দফতরগুলোর বেশিরভাগই চট্টগ্রাম বা ঢাকায় কেন্দ্রিক। ফলে, স্থানীয়দের নানা প্রশাসনিক কাজে দূরে যেতে হয়। এতে সময়, অর্থ ও শ্রম— সব কিছুর অপচয় হচ্ছে।

বক্তারা মনে করেন, নোয়াখালী বিভাগ হলে শুধু প্রশাসনিক কার্যক্রম সহজ হবে না, বরং শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও পর্যটনেও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

বিক্ষোভে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে রংপুর, দক্ষিণে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর এখন নোয়াখালী বিভাগের দাবি সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা অভিযোগ করেন, বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত সরকার এই অঞ্চলের উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্ব দেয়নি।

বিক্ষোভে উপস্থিত এক তরুণ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন চাই, কাজের সুযোগ চাই, সরকারি অফিসে ঘুরে ঘুরে কষ্ট পেতে চাই না। যদি আলাদা বিভাগ হয়, তাহলে আমাদের সবকিছু হাতের নাগালে আসবে।’

অন্যদিকে স্থানীয় সংগঠকরা জানিয়েছেন, এই দাবিকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে নোয়াখালী, ফেনী, ও লক্ষ্মীপুর জেলায় মানববন্ধন, মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ



বক্তারা আরও বলেন, ‘নোয়াখালী শুধুমাত্র ভৌগোলিকভাবে নয়, সাংস্কৃতিকভাবে ও ঐতিহাসিকভাবেও একটি আলাদা পরিচয়ের অঞ্চল। এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি ও অবহেলিত অবকাঠামো উন্নয়নের অভাব তাদেরকে আলাদা প্রশাসনিক কাঠামোর দাবি জানাতে বাধ্য করেছে।

বিক্ষোভে উপস্থিত কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে নোয়াখালীর নাম হয় শুধুই ঘূর্ণিঝড় আর নদীভাঙনের সঙ্গে। কিন্তু, এই অঞ্চলে প্রচুর সম্ভাবনা আছে। একটা বিভাগ হলে নোয়াখালী দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে।’

এদিকে, আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বহু রাজনীতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও সামাজিকমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। অভিনেতা জিয়াউল হক পলাশ লিখেছেন, ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই, এখনই চাই।’ তার এই আহ্বান সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ



রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘সরকারের জন্য এই দাবি এখন উপেক্ষা করা কঠিন হবে। কারণ বিষয়টি শুধু প্রশাসনিক নয়, বরং আঞ্চলিক পরিচয় ও মর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে শাসকদল এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান ঘোষণা করেনি।’

তবে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। 

সময় মুরাদ বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে আন্দোলন করছি না, আমরা করছি নোয়াখালীর মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য। এই আন্দোলন চলবে শান্তিপূর্ণভাবে, কিন্তু দৃঢ়ভাবে।’

প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে এক বিশাল মিছিল পল্টন হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত অগ্রসর হয়। পুলিশি তৎপরতায় যান চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

নোয়াখালী বিভাগের দাবিটি এখন জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় উঠে এসেছে। সরকারের পক্ষ থেকে যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কেকে/ এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  নোয়াখালী বিভাগ   জাতীয় প্রেস ক্লাব   বিক্ষোভ সমাবেশ  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বিয়ে ছাড়াই সংসার করার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
কালাইয়ে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ
কুমিল্লায় শিয়ালের কামড়ে শিশুসহ আহত ৭
নবীনগরের কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট চরমে
২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের

সর্বাধিক পঠিত

সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম
রাজশাহীতে চার পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ
রায়েরবাজারে দুই মাস ধরে অর্ধসমাপ্ত সাদেক খান সড়ক
মৌলভীবাজারে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন
গাজীপুরে টাইফ‌য়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন

জাতীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close