ভারতের উজান ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদী হয়ে আসা পানিতে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুর ২ টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তার পানি বাড়তে থাকে।
তিস্তা নদীরক্ষা বাধ না থাকায় পানি হু হু করে দহগ্রামের ঢুকে বন্যা দেখা দেয়। এতে পানি পানিবন্দী হয়ে পড়ে শত শত পরিবার। এ সময় পানির তোড়ে আঞ্চলিক পাকা রাস্তা প্রায় ৭ কিলোমটিার ও একটি সেতু এবং দুইটি কালভার্ট ভেঙে যায়। প্রায় ১০ হেক্টর আমন ধান, বাদামসহ অন্যান্য সবজি খেত পানিতে তলিয়ে ও চাষাবাদের জমি ভেঙে আবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকালে দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, তিস্তার পানিতে এ ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা চরাঞ্চলসহ কলোনিপাড়া, মুন্সিপাড়া, ক্লিনিক পাড়া, কাদেরের চর, মহিমপাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া, গুচ্ছগ্রাম, বড়বাড়ি, নতুনহাট, হাড়িপাড়া এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে। পানির তীব্র স্রোতে কলোনিপাড়া, মহিমপাড়া ও স্বাধীন বাংলা চত্বর এলাকার পাকা সড়ক ভেঙে যায়।
দহগ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টিয়ারপাড় এলাকার সাকোয়া নদীর উপর নির্মিত সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়ক, কলোনিপাড়ার দুইটি কালভার্ট ভেঙে এবং ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গেরবাড়ী হতে নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর উপর নির্মিত সেতু ভেঙে গেছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে একাকার হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষদের চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যায় সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এসব এলাকার পরিবার গুলো শিশু, বৃদ্ধ, গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
দহগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনিপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘প্রতি বছর ভারত পানি ছেড়ে দেয়। এতে আমাদের এই রাস্তা ভেঙে যায়। জমি-জায়গা, রাস্তা-ঘাট নষ্ট হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা চালু করলে আমাদের উপকার হবে, না হলে আমাদের ক্ষতি হতেই থাকবে।’
এদিকে পানি নামতে শুরু করলেও এলাকায় নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের জন্য জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু দেখেছি। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সংস্কার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জনদুর্ভোগ কমে যাবে।’
কেকে/ এমএ