বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ এলাকায় অবস্থিত ৩০টি টঙ দোকানে বেচাকেনা একেবারেই কমে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন দোকানিরা। এর ফলে এসব দোকানির পরিবার মিলিয়ে শতাধিক মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় বাঁধের পাশে থাকা পাকা, আধাপাকা ও টিনসেড ঘরগুলো অপসারণ করে জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। পরে বাঁধের পাশে অবস্থিত টঙ দোকানগুলোকে নিচে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ জন টঙ দোকানি তাদের দোকান সরিয়ে নিচে স্থাপন করেন। কিন্তু দোকান সরানোর পর থেকেই তাদের বেচাকেনা একেবারেই কমে যায়।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ এলাকায় আগের মতো আর লোকসমাগম নেই। টঙ দোকানগুলোতে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। দোকানিরা অলস সময় পার করছেন।
টঙ দোকানি প্রতিবন্ধী বাবু বলেন, তার পরিবারে ৪ জন সদস্য এই দোকানের উপর নির্ভরশীল। আগে দিনে ৪-৫ হাজার টাকা বিক্রি করে সংসার চালিয়ে সপ্তাহে সমিতির ঋনের কিস্তির ৩হাজার টাকা পরিশোধ করতে কোন সমস্যা হতো না। দোকান সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে ১হাজার টাকার বেশী বিক্রি হয়না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে, তারপর আবার ঋনের কিস্তির টাকার চাপ নিয়ে চরম হতাশায আছি। অন্য কোন কাজ কর্ম করার শারীরিক সামর্থ নাই।
ভুক্তভোগী দোকানি দুলাল, পারুল, রবিউল, সুজন, হামিদ, কোহিনুর ও মকবুল বলেন, নদী ভাঙনের কারণে তারা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে দোকানে বেঁচা কেনা একবারেই কম, কিস্তির বোঝা মাথায় নিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আমাদের পূনর্বাসন করবেন বলে উচ্ছেদ অভিযানের সময় আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের এখনো পুনর্বাসন করা হয়নি। আমরা যেন খেয়ে পড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে পারি সেজন্য আমাদের পূনর্বাসন করার জন্য সরকারের নিকট দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দিষ্ট জায়গা কাঁটা তারের বেড়া দেয়া হবে। উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্থদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
কেকে/ আরআই