মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় বিষধর সাপের কামড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এন্টিভেনম না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন নিহতের স্বজনরা।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম সুলতানা রাজিয়া (৪০)। সে সাতকাহনিয়া গ্রামের ভাড়াটিয়া শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তাদের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার গৌরপুরে হলেও স্বামীর ব্যবসায়ের সুবাদে বেশ কয়েক বছর ধরে তারা গজারিয়া ভাড়া বাসায় থাকছেন।
নিহতের স্বজনরা জানায়, শনিবার সকাল দশটার দিকে সেলাই মেশিনে কাজ করার সময় কালো রঙের বিষধর একটি সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। বিষয়টি সাথে সাথে তিনি প্রতিবেশী এবং তার স্বামীকে জানালে তারা তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক এন্টিভেনম দিতে দেরি করায় তারা ওই গৃহবধূকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশী হুমায়ুন মিয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে আমরা জানতে পারি- সে মারা গেছে। ভবেরচর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ডাক্তার বিষধর সাপ কামড় দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে না পারায় তাকে এন্টিভেনম দিতে চায়নি। বাধ্য হয়ে রোগীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এখন শুনছি তাকে আবার নারায়ণগঞ্জের কোন ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, ‘তাকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বিষধর সাপ কোন মানুষকে কামড়ালে সেখানে স্পষ্ট চিহ্ন থাকে এবং কিছু সময়ের মধ্যে শরীরে বিষের প্রভাব স্পষ্ট হয়। তবে এই রোগীর ক্ষেত্রে বিষয়টি ওরকম ছিল না। সেজন্য আমরা কিছু সময় তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলি। বিষয়টি
নিয়ে আমি সহকর্মী কয়েকজন ডাক্তারের সাথেও কথা বলি। তারা আমাকে আরও কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বিষের প্রভাব স্পষ্ট হলে এন্টিভেনম দেওয়ার পরামর্শ দেন। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিভেনম মজুত আছে। আমরা রোগীর স্বজনের ১৫-২০মিনিট অপেক্ষা করার অনুরোধ করলেও তারা আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে নিজেদের জিম্মায় রোগী নিয়ে ঢাকা চলে যায়।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ হলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। এ ব্যাপারে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
কেকে/এমএ