ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের পুরান বাউশিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। ভাঙচুর করা হয় স্টারলাইন পরিবহনের ৩টি যাত্রীবাহী বাস। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সকাল এগারোটার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মহাসড়কের পুরান বাউশিয়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম শ্রাবন্তী আক্তার (১৪)। সে গজারিয়া উপজেলার চর বাউশিয়া গ্রামের হানিফ মিয়া মেয়ে বলে জানা গেছে। সে গজারিয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মত শনিবার সকালে চর বাউশিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে স্কুলের সামনে নেমে রাস্তা পার হবার সময় ঢাকামুখী লেনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সেন্ট মার্টিন পরিবহনের একটি দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। 

এদিকে শ্রাবন্তীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্লাস বর্জন করে রাস্তায় নেমে আসে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রাবন্তী হত্যার বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ করে তারা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্টারলাইন পরিবহনের ৩টি বাস আটকে সেগুলো ভাঙচুর করে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সকাল সোয়া দশটার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে আছেন গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডা. হামিদা মুস্তফা।এসময় তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সকাল এগারোটায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শারমিন সুলতানা বলেন, 'সকাল পৌণে আটটার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। হাসপাতালে আনার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়েছিল'।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের লাশ বর্তমানে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে কিছু সময় মহাসড়কে যানযাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে তারা মহাসড়কে থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন'।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, 'বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে আমি শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তাদের সকল দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে'।

কেকে/এআর