কুমিল্লা নগরীতে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনা বর্ণনায় কুমিল্লা পুলিশ সুপারের বক্তব্যের সঙ্গে প্রেস রিলিজের তথ্যের গড়মিল পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন হত্যার শিকার সুমাইয়া আক্তার ও তার মাকে তিন ঘণ্টা ধরে অজ্ঞান করে তারপর হত্যা করে কবিরাজ মোবারক হোসেন। এছাড়াও ধর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে এটাও তিনি বলেননি।
তবে তাদের দেওয়া প্রেস রিলিজে বলা হয়, আসামি মো. মোবারক হোসেন সরাসরি ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথির রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার মা তাহমিনা বেগম ফাতেমা দেখে ফেলেন। পরে তিনি আসামিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে মোবারক হোসেন ও তাহমিনা বেগম ফাতেমার মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে আসামি মোবারক হোসেন ভিকটিম তাহমিনা বেগম ফাতেমাকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন।
অতঃপর আসামি আবারও ভিকটিম সুমাইয়া আফরিন রিনথির রুমে প্রবেশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং সে প্রতিরোধ করতে গেলে তাকেও গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর আসামি মোবারক ভিকটিমের বাড়িতে থাকা ৪টি মোবাইল ও ১টি ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এখানে কোথাও উল্লেখ নেই—তিন ঘণ্টা কবিরাজ তাদেরকে অজ্ঞান করে রেখে তারপর হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে সুমাইয়ার বান্ধবী হুমায়রা তাসনিম প্রমি বলেন, আমরা গণমাধ্যম সূত্রে প্রথমে জানতে পেরেছি পুলিশ সুপার বলেছেন তিন ঘণ্টা সুমাইয়া ও তার মাকে অজ্ঞান করে তারপর হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু প্রেস রিলিজের কোনো কিছু উল্লেখ নেই। তাহলে পুলিশ সুপার কি কোন কিছু গোপন করছেন?
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনকে তদন্তে গড়মিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মোবারক হোসেন। পেশায় তিনি একজন কবিরাজ। সুমাইয়াকে কথিত জ্বীনে ধরায় তিনি সুমাইয়াকে ঝাড়ফুঁক ও পানি পড়া দিতে প্রায়ই বাসায় যেতেন। সোমবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা এবং মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন—কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম ও তার মেয়ে সুমাইয়া আফরিন রিনথি। আফরিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
কেকে/এজে