লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদীর তীরে নির্মিত প্রায় ৫ কোটি টাকার সলেডি স্প্যার বাঁধ এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বাঁধ থেকে মাত্র ১০০ গজ ভাটিতে বসানো হয়েছে বালু উত্তোলনের বোমা মেশিন। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল।
২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি কাজের অজুহাত দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছেন পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর গ্রামের শওকত আলী ওরফে ‘বালু শওকত’। অতীতে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের এপিএস মিজানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তিনি তিস্তা নদীর বালু ব্যবসা দেখভাল করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা যায়, সলেডি স্প্যার বাঁধ থেকে ১০০ গজ দূরে বোমা মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করা হচ্ছে।
শ্রমিকরা জানান, শওকতের নির্দেশেই এ কাজ চলছে।
স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে বাঁধের নিচে বড় গর্ত তৈরি হয়ে যেকোনো সময় বাঁধটি ধসে পড়তে পারে। এতে শত শত পরিবার ও আবাদি জমি তিস্তার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
এ বিষয়ে শওকত আলী দাবি করেন, দিনাজপুরের এক ঠিকাদার জিও ব্যাগে বালু ভরাটের কাজ পেয়েছেন। তার হয়ে তিনি কিছু দিন বালু উত্তোলন করেছেন।
তবে বর্তমানে কে বালু তুলছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, “জিও ব্যাগে বালু ভরাট ও ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয়ভাবে বালু ম্যানেজ করার কথা হয়েছে। তবে বাঁধের নিচে মেশিন বসানো ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিধান কান্তি হালদার বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদীর তীরে নির্মিত সলেডি স্প্যার বাঁধ এলাকায় গিয়ে মেশিন মালিককে পাওয়া যায়নি। তবে বালু মহলে পড়ে থাকা একটি মেশিন ও পাইপ ধ্বংস করা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, ‘বিষয়টি জানি না। তবে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএ