তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ধরনের উদ্যোগ সাংবাদিকদের পেশাগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। পর্যাপ্ত সময় পেলে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করে দিয়ে যাব।
সোমবার (৮ই সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির সঙ্গে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রায় দুই হাজার সদস্যের মধ্যে বিমা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, বেসরকারি খাতকেও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বিমা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও সাংবাদিকদের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে প্রতি তিন মাস পরপর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মপরিধি বাড়ানো হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া লেজিসলেটিভ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নেও সরকার কাজ করছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে যারা ত্যাগস্বীকার করেছেন, তাদের লড়াইয়ের গল্প জনগণের নিকট তুলে ধরতে হবে। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের অবদান গণমাধ্যমে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ডিআরইউ যেন সরকারী সুবিধা পায় সেই চেস্টা করা হবে জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা ৯ম ওয়েজবোর্ড করতে চাই। কিন্তু এটা খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এটার সাথে সম্পৃক্ত। যে সময় দরকার তা পেলে করে দিয়ে যেতে পারবো, না হলে একটা পর্যায় পর্যন্ত রেখে দিয়ে যাবো পরবর্তী সরকার তা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহতদের অনেকেই এখনো আড়ালের রয়ে গেছে। তাদের নিয়ে প্রতিবেদন হলে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে সহজ হয়। তাই তাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার অনুরোধ জানান তিনি।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, এখনও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক দিনে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সাংবাদিকদের আহত করা হয়েছে। আমরা এসব ঘটনার বিচার চাই। সাংবাদিকরা জীবনের নিরাপত্তা চায়।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, কয়েকটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না। অনেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। রেখে যাওয়া সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা দেয়ার দাবী জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে সব কোম্পানি গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না সরকার তাদেরকে ব্যাংক লোন দিলে তারা গ্রাহকে টাকা ফেরত দিতে পারবে। এতে করে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। অনুষ্ঠানে তিনি ডিআরইউকে আর্থিক সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
কেকে/এজে