রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলায় আরো ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন গ্রেফতার হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়লন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
এর আগে, রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, গোয়ালন্দের মাল্লাপট্টি শাকের ফকির পাড়ার হেলাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম শুভ (১৭), নতুনপাড়া মাল্লাপট্টির শওকত সরদারের ছেলে জীবন সরদার (২২), আদর্শ গ্রামের ছালামের ছেলে বিল্লু ও ফরিদপুর কোতোয়ালির ডিগ্রিচর বারখাদার নিজাম উদ্দিন সরদারের ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস সরদার (৩৬)।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার জুম্মার পর তৌহিদী জনতা নুরাল পাগলের দরবার শরীফে হামলা চালায়। সে সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এসময় পুলিশ সদস্যসহ আহত হয় অর্ধশত মানুষ। এছাড়াও নিহত হয় একজন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার পর গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম বাদি হয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় রাতে ৪ আসামিকে গ্রেফতার করাসহ এখন পর্যন্ত মোট গ্রেফতার হয়েছে ১১ জন এবং আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, নুরাল পাগলের কবর উঁচু থেকে নীচু করাসহ বিভিন্ন দাবিতে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুম্মার নামাজের পর ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ফকির মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে যেতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে। সেই সাথে ৫ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের ২ জনকে পিটিয়ে ও ঢিল ছুঁড়ে আহত করে।
এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলের বাড়ি ও দরবারের গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ভবন-দরবার শরীফ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদী জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে পুড়িয়ে দেয়। রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুরাল পাগলের ভক্ত রাসেল মোল্লা (২৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়।
এদিকে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলায় শনিবার রাতে ডিবি ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের অভিযানে গোয়ালন্দের বিভিন্নস্থান থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
কেকে/বি