নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে একটি কোম্পানির আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান হাবিব নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ জন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিক হাবিবুর রহমান হাবিব সদর উপজেলা সংলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে এবং উত্তরা ইপিজেডের ইকু ইন্টারন্যাশনাল (স্পিনিং অ্যান্ড কম্পোজিট) কোম্পানির কর্মী।
নীলফামারী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরহান তানভিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাবিবের বুকে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকরা চার দিন ধরে ন্যায্য বেতন, অতিরিক্ত কাজের মুল্য পরিশোধ এবং ছাঁটাইকৃত পুরাতন শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছিলেন। এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ইপিজেডের অন্যান্য কোম্পানির শ্রমিকরাও একই দাবিতে একত্রিত হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ সোমবার নোটিশ জারি করে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করতে ইপিজেডে গেলে শ্রমিকরা মূল ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করে। এসময় নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এমতাবস্তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আহতদের মধ্যে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন মো. মোমিনুর রহমান (২৫), মো. শাহিন (২৬), নুর আলম (৩০), মোস্তাক আহমেদ (২৫), লিপি আক্তার (২৬) ও জমিলা খাতুন (৩৫)।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টানা আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নোটিশে পুনরায় খোলার কথা জানানো হবে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, ‘আমরা এখনো সড়কে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।’
কেকে/ এমএস