বাংলাদেশে মাত্র পাঁচ মাস বসবাস করেও চীনের তরুণ নাগরিক গাও চেংজি ইতোমধ্যেই অনেক দরিদ্র পরিবারের কাছে বন্ধু ও আপনজন হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তার আন্তরিক দৃষ্টি ও মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় মানুষের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।
গাও চেংজির প্রতিষ্ঠানের দর্শন হলো ভালোবাসার মাধ্যমে আলো ছড়িয়ে দেওয়া। সেই দর্শনকে কেন্দ্র করে তিনি বাংলাদেশ ও নেপালে বিনামূল্যে চীনা ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছেন। এতে দরিদ্র শিশু, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং বেকার তরুণরা উপকৃত হচ্ছে। ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে তারা নতুন দক্ষতা অর্জন করছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াচ্ছে এবং পরিবারের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
শুধু ভাষা শিক্ষা নয়, গাও চেংজি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগেও সক্রিয়। তিনি এতিমখানায় সহায়তা প্রদান করেছেন, অসচ্ছল পরিবারকে ঘরবাড়ি সংস্কারে সাহায্য করেছেন এবং কিছু পরিবারকে ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য অর্থায়ন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি মোংলার নৌকার মাঝীদের মাঝে ৫০টি রেইনকোট বিতরণ করেছেন এবং অনেক শিক্ষার্থীর জন্য মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছেন, যাতে তাদের পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত না হয়।
বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে তিনি ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি হিসেবে দেখছেন। তার বিশ্বাস, চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে, আর এই দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নত হবে। এতে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।
আগামী দিনে সারা বাংলাদেশে আরও বিনামূল্যে চীনা ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের। এই উদ্যোগ দুই দেশের জনগণের মধ্যে বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আরও গভীর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের চোখে গাও চেংজি আজ কেবল একজন চীনা নাগরিক নন, বরং একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্ধু, যিনি ভালোবাসা ও আশা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। তার কর্মকাণ্ড চীন-বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের এক জীবন্ত প্রতিফলন।
কেকে/এজে