পটুয়াখালী বাউফলের জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়ক গুলোর বেহাল অবস্থা হয়েছে। বিভিন্ন সড়কের স্থানে স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। বর্তমানে সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ মহাভোগান্তির কবলে পড়েছেন। একাধিক সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক যাত্রীবাহী বাসগুলো চলাচল করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও ধ্বস নেমেছে। শিগগিরই সড়কগুলো মেরামত করা না হলে পটুয়াখালী জেলার বাউফল, দশমিনা, গলাচিপার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, পটুয়াখালী থেকে দশমিনা উপজেলা, দশমিনা থেকে গলাচিপা উপজেলা,বাউফল উপজেলার কালাইয়া-নওমালা ও হাজীর হাট এবং মিলঘর থেকে বগা ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজ গেট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এখানে ওখানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। গলাচিপা-দশমিনা ও বাউফল থেকে ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাকগুলো মাঝে মধ্যে ছোট বড় দূর্ঘটনায় কবলে পড়ে থাকে। যাত্রীবাহী বাসগুলো চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে।
এছাড়া বাউফল উপজেলায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক এখন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সূত্র জানায়, বাউফলে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অদিধফতর (এলজিইডি) এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় প্রায় সাড়ে ৯শ’ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে কনকদিয়া থেকে কাছিপাড়া ভায়া বাহেরচর ও শাপলাখালী ব্রীজ থেকে কনকদিয়া, বাউফল বাংলাবাজার সড়কের থেকে নাজিরপুর মুন্সীবাড়ি ও সুলতানাবাদ, বড়ডালিমা ব্রীজ থেকে ধানদী বাজার ভায়া কেশবপুর-ভড়িপাশা খেয়াঘাট থেকে তালতলি বাজার,ভায়া মমিনপুর বাজার।
নুরাইনপুর থেকে কনকদিয়া ভায়া কাছিপাড়া, ঘুশিংগা পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে অলিপুরা বাজার, কাঁচা সড়ক কেশবপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের খন্দকার বাড়ি থেকে তেঁতুলিয়া নদীর পাড় কয়েকটি প্রধান সড়কসহ ১৫ ইউনিয়নের প্রায় ১৫০ কিলোমিটার অভ্যান্তরিণ সড়ক ও কাঁচা প্রায় ৭০০ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পরেছে।
এসব সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও ২ ফুট আবার কোথাও ৪ ফুট গভীর গর্তের কারনে যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়।
বর্ষা মৌসুমে সড়কের ভাংঙ্গা অংশে কাদা-পানি জমা হয়ে থাকায় সাধারন মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। মাঝে মধ্যে প্রধান ও অভ্যন্তরীণ কিছু সড়কের খানাখন্দ মেরামত করা হলেও মাস যেতে না যেতেই তা আগের চেহারায় ফিরে যায়। তাই সড়কগুলোদিয়ে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। প্রতিদিন ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। প্রধান ও আভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর এ বেহাল অবস্থায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ করছে বলে মনে করছেন ওই সব এলাকার স্থানীয় লোকজন। ভাংঙ্গা সড়কের কারণে পণ্য পরিবহনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ওই সড়কগুলো অধিকাংশ স্থানে গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধের পথে। রাস্তার গর্তের জমানো পানিতে নৌকা ছেড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
বাউফলের নওমালা বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সড়কে তৈরি হওয়া বড়বড় গর্তে আটকে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক শ্রমিকরা পণ্য পরিবহন করতে চান না। অনেকে আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ট্রাক শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি করে পণ্য আমদানী করছেন। তিনি খুব শিগগিরই সড়কগুলো মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান।
দশমিনা- ঢাকাগামী আব্দুর রহিম নামে এক যাত্রী জানান, দশমিনা ভায়া বাউফল- ঢাকা সড়ক যোগাযোগ বর্তমানে এতটাই খারাপ যে পূর্বের তুলনায় দশমিনা থেকে ঢাকা যেতে দুই ঘণ্টা সময় বেশি লাগে। তাই সড়কটি মেরামত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী মো. বোরহান উদ্দিন মোল্লা জানান, সড়কগুলো খারাপ হওয়ার পিছনে বড় চাকার লড়ি গাড়িগুলোকে দায়ি। লড়ি গাড়িগুলোর মেশিন জমি চাষের ক্ষেতে ব্যবহার করার কথা থাকলেও মেশিনের সাথে অতিরিক্ত বডি সংযোজন করে তা দিয়ে মালামাল পরিবহন করার কারণে সড়কগুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি উপাস্থাপন করা হবে বলেও তিনি জানান।
কেকে/এআর