বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতিনিয়ত নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসক সংকট, যন্ত্রপাতির অচলাবস্থা ও নাজুক পরিবেশ সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যসেবার নামে চলছে এক অকার্যকর ব্যবস্থা।
রোববার (২০ জুলাই) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের গাইনী, মেডিসিন, অ্যানেসথেসিয়া, রেডিওলজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগে নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক। এক্স-রে মেশিন থাকলেও নেই কোনো টেকনিশিয়ান, ফলে রোগীদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি ২৩ বছর বয়সি জান্নাত আক্তার বলেন, ঔষধ ঠিকভাবে দেওয়া হয় না। ফ্লোর-ওয়াশরুমে ভেতরে দুর্গন্ধে থাকা যায় না। অনেকেই টয়লেট দেখে বমি করে ফেলেন।
৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার স্বজন বলেন, সরকারি খাবার সময়মতো আসে না, মানও খারাপ। তিন দিনেও অনেক সময় খাবার মেলে না।
অভিযোগ রয়েছে, শিশুদের ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে খাবার স্যালাইনের সঙ্গে ডাব সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না।
অন্যদিকে ২৮ বছর বয়সি রোগী শাহিদা পারভিন বলেন, চিকিৎসকরা সরকারি ল্যাব ব্যবহার না করে বাইরের ডায়াগনস্টিকে পাঠান। এতে রোগীর খরচ বাড়ছে।
হাসপাতালে থাকার কথা পাঁচজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর, বাস্তবে রয়েছেন মাত্র দুজন। এতে নোংরা পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, জনবল সংকট, বাজেট ঘাটতি আর যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বারবার জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বক্তব্য নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহতা জারাব সালেহিনকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। পরে তাকে ফোন যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ অবস্থায় স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ, যন্ত্রপাতি সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা আরও হুমকির মুখে পড়বে।
কেকে/এএম