শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫,
১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: কারওয়ান বাজার ও মগবাজারে অগ্নিকাণ্ড      নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুর আগেই পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছি      শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা শুরু      বন্যা-ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় নিহত ৪৪      দুদকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ      বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ      ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’      
জাতীয়
‘জেন-জি’র প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি: গ্রাফিতির আল্পনায় ‘৩৬ জুলাই’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৮:৪১ পিএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

নীতি গবেষণা কেন্দ্র (এনজিকে) আয়োজিত এক ব্যতিক্রমধর্মী গ্রাফিতি প্রদর্শনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘‘জেন-জি’র প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি: গ্রাফিতির আল্পনায় ‘৩৬ জুলাই’’ শিরোনামের এই আয়োজনে অংশ নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী শিক্ষার্থীরা, বিশিষ্ট আইনজীবী, গবেষক, শিক্ষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা।

শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে এ অনুষ্ঠনের আয়োজন করা হয়। 

নীতি গবেষণা কেন্দ্র, গবেষণা ফেলো এবং শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. খান শরীফুজ্জামান তার স্বাগত বক্তব্যে ব্যাখ্যা করেন—কেন এই পাঁচ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখানে যারা আজকে উপস্থিত, তারা কোনো দলের নয়, কোনো মতের নয়; তারা হলো জাতির আনসাং হিরো, যাদের কণ্ঠস্বর সচরাচর মিডিয়াতে আসে না। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনে তাদের নিঃস্বার্থ অংশগ্রহণ ছিল যুগান্তকারী। তাই তাদের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই আমরা বুঝতে পারি জেন-জি’র স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও বাস্তবতার ফারাক।’

ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ


গ্রাফিতি প্রেজেন্টেশন-এ সাংবাদিক ও গবেষক মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান আন্দোলনের স্মৃতি ও ভাবনাগুলো গ্রাফিতির মাধ্যমে চিত্রিত করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রজন্মের আন্দোলনের ভাষা রক্ত নয়, রং। দেয়ালের রেখায় তারা লিখেছে প্রতিবাদ, প্রতিশ্রুতি এবং প্রত্যয়ের কথা।’

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুখ্য আলোচক অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন বলেন, ‘তরুণদের এই আত্মত্যাগ ও সক্রিয় অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো। রাষ্ট্র যদি এই কণ্ঠস্বর না শোনে, তবে নীতিনির্ধারণ হবে একচোখা, একমুখী।’ ‌

তিনি আরও বলেন, এই গণঅভ্যুত্থান পুরোপুরি ব্যর্থ হয়নি বেশ কিছু হওয়ার জন্য আছে যেমন ভারতের সামনে আমরা আমাদের রাজনীতিবিদরা ও মিডিয়া উচ্চস্বরে ন্যায় কথা বলছে। এটা আমাদের দল মত নির্বিশেষে সকলেরই সম্মিলিত অর্জন। আর দুটি গোষ্ঠী যে একেবারে আন্দোলনের পরপরই জাতীয় পর্যায়ে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে তাহলে নারীরা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। 

সভায় বক্তব্য রাখেন পাঁচ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা–সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম, বাংলা মাধ্যম এবং মাদ্রাসা শিক্ষাপদ্ধতির শিক্ষার্থীরা। তারা তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, প্রত্যাশা এবং এক বছরের ব্যবধানে প্রাপ্তির অভাব নিয়ে অকপটে মত প্রকাশ করেন।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম আন্দোলনের পরে প্রশাসন ও রাজনীতি আমাদের কণ্ঠ শুনবে। কিন্তু আজও দুর্নীতি, দলীয়করণ আর নিপীড়ন থেমে নেই।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা চাই নিরাপদ, অংশগ্রহণমূলক, এবং শ্রদ্ধাপূর্ণ শিক্ষা পরিবেশ–যেখানে মত প্রকাশ অপরাধ নয়।’

বাংলা মাধ্যমের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আন্দোলনে আমাদের রক্ত ঝরেছে, এখন চোখে পানি ঝরে যখন দেখি কিছুই বদলায়নি। আমরা শুধু নতুন সরকার চাই না, চাই নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি।’

ইংরেজি মাধ্যমের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সবসময় রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছিল, কিন্তু ৩৬ জুলাই আমাদের বদলে দিয়েছে। আমরা বুঝেছি, রাজনীতি মানে আমাদের জীবন, মর্যাদা আর স্বাধীনতা। এখন আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে আমাদের মতামত লুকিয়ে রাখতে হবে না বা কথা বলার জন্য ভয় পেতে হবে না। 

মাদ্রাসা শিক্ষার এক প্রতিনিধি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে মূলধারায় নিতে হবে। আমরাও সমানভাবে রাষ্ট্রের নাগরিক। আন্দোলনে আমরা সবাই একসাথে ছিলাম, কিন্তু এখনও সমাজ আমাদের আলাদা চোখে দেখে, বৈষম্য বিদ্যমান, রাষ্ট্রের কাছে আমরা আবারও গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছি অথচ সকল আন্দোলন প্রতিবাদে আলিমরাই প্রথমে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং সামনে সারিতে থাকে।’

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ড. শাকিল আহম্মেদ, প্রধান নির্বাহী, নীতি গবেষণা কেন্দ্র এবং সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বলেন, ‘এই প্রজন্ম কেবল প্রতিবাদ করতে জানে না, তারা নীতি প্রস্তাব করতেও প্রস্তুত। আমাদের দায়িত্ব হলো সেই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া।’

এই মতবিনিময় সভা তরুণদের রাজনৈতিক ও সামাজিক চেতনার বহিঃপ্রকাশের একটি মাইলফলক হয়ে রইল। আলোচকরা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারনে এই প্রজন্মের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা গুরুত্ব পাবে।

কেকে/এজে
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

কারওয়ান বাজার ও মগবাজারে অগ্নিকাণ্ড
নেতৃত্বের অযোগ্যতায় পিছিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম: সাদিক কায়েম
কুমিল্লায় কাফনের কাপড় পরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ
সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে: তাওহিদুল ইসলাম
খুলনায় পানি ও বিদ্যুৎ প্রকৌশলী সমিতির মতবিনিময়

সর্বাধিক পঠিত

বাঞ্ছারামপুরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল
চাঁদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা রয়েছে: তানভীর হুদা
বন বিভাগে সুফল প্রকল্পে দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার দাম্ভিকতা
সোনাইমুড়ীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা
খুলনায় পানি ও বিদ্যুৎ প্রকৌশলী সমিতির মতবিনিময়

জাতীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close