কক্সবাজারের রামুর সীমান্তের ত্রাস ডাকাত শাহীনকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের জাউজপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, ডাকাতির সরঞ্জাম ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে আছে তিনটি একনলা বন্দুক, একটি একে-২২ রাইফেল, ১০ রাউন্ড গুলি ও চারটি কার্তুজ ও ১০টি দেশীয় ধারালো কিরিচ এবং ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
সেনাবাহিনী জানায়, সবশেষ গতকাল রাতে জানতে পারেন, শাহিন ডাকাত মাঝির কাটা এলাকায় নিজ বাসায় অবস্থান করবে। পরে সকাল আটটায় ১০ পদাতিক ডিভিশনের ৪টি টহল দল সমন্বিতভাবে বিজিবি এর সহায়তায় একটি ঝটিকা অপারেশন পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনার সময় সেনা টহল দল শাহীন ডাকাতের বাসভবনের চারদিকে কর্ডন করে। এ সময় কৌশলগত সুবিধাজনক তিনটি অবস্থানে সেনা টহল মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে শাহীন ডাকাত ও তার সহযোগীরা ভড়কে যায় এবং কয়েক রাউন্ড এলোপাতারি গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে গর্জনিয়ায় ধৃত শাহীনের বাড়ির সামনে যৌথ প্রেসব্রিফিং করেছে সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবি।
ব্রিফিংকালে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের লেফট্যানেন্ট কর্নেল মনোয়ার হোসেন, র্যাব-১৫ অধিনায়ক কর্নেল কামরুল হাসান ও বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল কফিল উদ্দিন। তারা অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
শাহিন দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে গরু চোরাচালানসহ সব ধরনের চোরাচালানের সাথে জড়িত। নাইক্ষ্যংছড়ি, রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়াসহ সীমান্ত এলাকায় বিশাল সশস্ত্র সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের ছত্রছায়ায় ছিলো। পরে সরকার পতনের পর আরেকটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।
মায়ানমার থেকে আসা বার্মিজ গরু, সিগারেট, ইয়াবা, আইসসহ অসংখ্য মাদক বাংলাদেশে প্রবেশে করতো। বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে চাল-ডাল-তেলসহ অনেক খাদ্যসামগ্রী মায়ানমারে পাচার হতো। এসব নিয়ন্ত্রণে ছিল তার বিশাল অস্ত্রসহ বাহিনী।
সীমান্ত চোরাচালানকে কেন্দ্র করে রামুর গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে একাধিক খুন হয়েছে। সব হত্যাকাণ্ডে সে জড়িত ছিল। তার বাহিনীর কাছে জিম্মি গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ার অর্ধলাখ মানুষ। ইতোপূর্বে যৌথভাবে বারবার চেষ্টা করেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে তার গ্রেফতারের পর খুশী হয়েছে এলাকাবাসী। সেনাবাহিনীর চৌকস দলের অভিযানে শাহীন ডাকাত গ্রেফতার হওয়ায় পুরো এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
কেকে/ এমএস