নাটোরের সিংড়ার বড় আদিমপুর গ্রামের মসজিদ মাদ্রাসা ও কবরস্থান কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গরম তেলে অগ্নিদগ্ধে আহত জাকির হোসেনের (৪৫) অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের প্রায় সব অংশই ঝলসে গেছে। বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কমিটি নিয়ে গত ২৭ মে সন্ধ্যায় বিয়াশ মাবিয়া মোড় এলাকায় আসাদ ও নাহিদ গ্রুপের সংঘর্ষে পিয়াজু ভাজা গরম তেলের হামলায় গুরুতর আহত হন জাকির হোসেন। জাকির বড় আদিমপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে এবং নাহিদ গ্রুপের লোক।
এ ঘটনায় জাকির হোসেনের ছোট ভাই আশরাফুল (৪০) একই গ্রামের আজিম (৪৫) ও আব্দুল বারি (৪২) নামের আরো তিন জন আহত হন। এর মধ্যে আজিম চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও অগ্নিদগ্ধে গুরুতর আহত জাকিরসহ বাকি দুইজন ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি দুইজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় আদিমপুর গ্রামের মসজিদ, কবরস্থান ও কওমি মাদ্রাসার বেশ কিছু অর্থ সম্পদ থাকায় ধর্মীয় এ তিন প্রতিষ্ঠানের কমিটি নিয়ে ওই গ্রামের আসাদ ও নাহিদ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
এর জেরে গত ২৭ মে সন্ধ্যায় আসাদ গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে বিয়াশ মাবিয়া মোড় এলাকায় প্রথমে পিয়াজু ব্যবসায়ী আব্দুল বারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নাহিদ গ্রুপের জাকিরকে হামলা করে এবং জাকির মাটিতে পড়ে গেলে পিয়াজু ভাজা গরম তেল তার শরীরে ঢেলে দেয়। এতে তার শরীর ঝলসে যায়।
এ সময় পিয়াজু ব্যবসায়ী আব্দুল বারি এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে। পরে নাহিদের বড় ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেনের তিন কন্যা ইলেকট্রনিক শোরুমে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের বাঁধায় আসাদ গ্রুপ তার লোকজন নিয়ে পালিয়ে যায়।
এসব ঘটনায় গত ২৮ মে নাহিদ বাদী হয়ে আসাদ গ্রুপের মো. আবজাল হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে মো. শাওনসহ ১৪ জনকে আসামি করে সিংড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত আসামি ধরা না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
বিয়াশ মাবিয়ার মোড় বাজার কমিটির সভাপতি মো. বেলাল হোসেনসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী রমিজুল ও পল্লি চিকিৎসক মামুন জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
সিংড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এএম