গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার দুর্বাটি এলাকায় মাদকের আতঙ্কের নাম এখন মো. সাখাওয়াত হোসেন (৩৮)। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জুমার নামাজের খুতবার আগে মসজিদে দাঁড়িয়ে মুসল্লিদের সামনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, আর মাদক ব্যবসায় জড়াবেন না। এলাকাবাসী তাকে বিশ্বাস করেছিল, দিয়েছিল নতুন করে সমাজে মিশে যাওয়ার সুযোগ। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভেঙে তিনি এখন ‘মাদকের মসনদে’ আরো শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত।
সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কেবল নিজেই মাদক ব্যবসায় জড়িত নন, বরং গোটা এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। গ্রাম্য কৃষক, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটচালকদের তিনি বানিয়েছেন বাহক, আর তরুণ সমাজকে করে তুলেছেন মাদকসেবী।
তার অন্যতম সহযোগী দুর্বাটি গ্রামের হৃদয় ভূঁইয়া, প্রবাস ফেরত মোফাজ্জল হোসেন এবং মো. হাবিবুর রহমান হাবি। পুলিশের চোখ এড়িয়ে তারা ১০টিরও বেশি স্পটে প্রকাশ্যে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা ও চোলাই মদ সরবরাহ করছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যারা প্রতিবাদ করে, তাদেরকে নানা হুমকি ও ভয়ভীতির মুখে পড়তে হয়। একাধিক পরিবারে মাদকসেবী স্বামী তার স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালাচ্ছে, কেউ কেউ বিক্রি করে দিচ্ছে পরিবারের শেষ সম্বল। এর ফলে এলাকাজুড়ে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মত অপরাধ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।
এলাকাবাসী এখন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ এবং স্থায়ী সমাধান কামনা করছেন, যাতে দুর্বাটি ও আশেপাশের অঞ্চল আবারও শান্তি ও নিরাপত্তার মুখ দেখতে পায়।
কালীগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ মোমেন বলেন, “আমি প্রতিটি মসজিদে গিয়েছি, উঠান বৈঠক করেছি, মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছি, সাখাওয়াতকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু সে কথা রাখেনি। পুলিশকে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, এখন তাদেরই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।”
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন জানান, বাঙালহাওলা ও দুর্বাটি এলাকায় এ ধরনের কর্মকান্ডে বিষয়ে তিনি আগে জানতেন না। তবে এখন তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই অভিযান পরিচালনার আশ্বাস দেন।
তিনি আরো বলেন, “মাদক কারবারিরা যত শক্তিশালীই হোক, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি।”
কেকে/এআর