দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীরা এবার তাদের ন্যায্য দাবির পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন আগামী ২২ ও ২৩ জুন দেশের সকল অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণে ‘অর্ধদিবস’ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. সালাউদ্দিন জানান, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হওয়ার পর বিচারকগণের জন্য পৃথক বেতন স্কেল ও নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সহায়ক কর্মচারীরা সেই স্কেলের আওতায় আসেননি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তারা জনপ্রশাসনের নিয়মে বৈষম্যমূলক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।
তারা আরো জানান, বিচার বিভাগীয় বিচারকদের যেমন বিচারিক ভাতা, চৌকি ভাতা, অবকাশকালীন দায়িত্ব ভাতা এবং এক মাসের সমপরিমাণ অবকাশ ভাতা দেওয়া হয়, তেমনি একই দপ্তরে কাজ করা সহায়ক কর্মচারীরা এসব সুবিধা থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে সহায়ক কর্মচারীরা নতুন আশায় বুক বেঁধেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসোসিয়েশন তাদের দুই দফা যৌক্তিক দাবি তুলে ধরে। যদিও কমিশন এ দাবিকে যৌক্তিক বলে স্বীকৃতি দিলেও সরকারের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনে তাদের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ রাখা হয়নি।
এ অবস্থায় গত ১৯ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসোসিয়েশন দুই দফা দাবি উত্থাপন করে
১. সুপ্রিম কোর্টের অধীন পৃথক সচিবালয় গঠন এবং অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীদের বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা।
২. বর্তমান জুডিশিয়াল সার্ভিস স্কেলের ১ম-৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম-১২তম গ্রেডে সহায়ক কর্মচারীদের স্থান দেওয়া এবং ব্লক পদ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজন ও পদোন্নতির ব্যবস্থা রাখা।
দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে গত ৫ মে সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত কর্মচারীরা স্ব স্ব আদালত প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি পালন করেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না আসায় নতুন করে ২২ ও ২৩ জুন ‘অর্ধদিবস’ সর্বাত্মক কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসোসিয়েশন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, সাংবাদিক সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এই ন্যায্য আন্দোলনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
কেকে/ এমএস