বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বর্তমান সরকারের কাছে নিরাপদ নয়, দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা আজ হুমকির মুখে। যারা সুযোগ সন্ধানী, যারা রাজপথে ছিল না, মিটিং মিছিলে ছিল না। তারাই বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তাদেরকে বিএনপির সদস্য করা যাবে না। আওয়ামী লীগের লোকজনতো নয়ই। এখন পুলিশ যেসব আওয়ামী লীগের লোকজনকে গ্রেফতার করছে তাদেরকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপির নামধারীরা। মনে রাখতে হবে রাজপথে আমাদেরকে কেউ ছাড় দেয় নি। এমন কোন পুরাতন নেতা কর্মী নাই, যারা জেল খাটেননি, হামলার শিকার হননি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকালে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, আজকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। প্রথম দিকে যারা চাঁদাবাজি করছে তাদের মধ্যে এক দেড় হাজারকে তারেক রহমান বহিষ্কার করেছে। যারা এই সরকারে আছে তারাই এখন চাঁদাবাজি করছে। গত ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগও পাচার করেছে। দেশে এখন শান্তি নাই। এই সরকারের বিরুদ্ধে কোন কথা লেখা হচ্ছে না। কোন মিডিয়ায় এই সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে পারছে না। আওয়ামী লীগের সময়ও লিখতে পারতো না।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, শুধু আওয়ামী লীগই নয়, এখন বিএনপির শত্রু সবাই। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। অন্য দলও নিশ্চিত হয়েছে এ সরকারও নিশ্চিত। তাই নির্বাচন দেয়ার কথা বলা যাবে না। আমরা গত ১৭ বছর আন্দোলন করেছি। আমরা আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করেছি। তখন হঠাৎ করে এসেই আওয়ামী লীগকে পতন করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ কিন্তু একদিনে পতন হয়নি। মির্জা আব্বাস বলেন, আমার বদ্ধমূল ধারণা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্ভমৌত্বকে রক্ষার জন্য আমার নেতা জিয়া প্রাণ দিয়েছে, সেই স্বাধীনতা আজ হুমকির মুখে। আমরা আগে কুকুরের মুখে ছিলাম, এখন আমরা বাঘের মুখে পড়েছি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমি হয়তো আরো পরে নির্বাচন করতে বলতাম। কিন্তু আমার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। এই সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেছে বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবর্তন হতে পারে। এটা বলে উনি কি করে সরকারের উপদেষ্টা আছেন ৷সেন্টমার্টিন বন্ধ হলো কেন, সাজেক কেন বন্ধ হলো, পোর্ট বিদেশিদের হাতে দেয়া হচ্ছে কেন। যা করার আমরা করবো, নির্বাচিত সরকার করবে। বিদেশিদের দিয়ে কেন করবো। দেশের অভ্যন্তর দিয়ে করিডোর দিতে চাচ্ছেন। আপনি কি আপনার বাড়ির উপর দিয়ে রাস্তা দিবেন। ওই করিডর দিয়ে কি আসবে আপনি কি জানেন। নির্বাচিত সরকার ছাড়া এই সিদ্ধান্ত আপনারা দিতে পারেন না। তাহলে ভয়াবহ অবস্থা হবে। এই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে সরকারের অবস্থান জাতির কাছে সুস্পষ্ট করুন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভুঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন। কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়ার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন, মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু।
কেকে/ এমএস