শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫,
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: চব্বিশের স্মরণে ২৪ দফা ইশতেহার দেবে এনসিপি      রোববার শাহবাগ এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ      ৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র      জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন      গুলিস্তান সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে      গুলিস্তানে মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে সার্ভিসের ১১ ইউনিট      ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ : তথ্য উপদেষ্টা      
দেশজুড়ে
পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

গাজীপুরে জেএল ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক (সোয়েটার) কারখানায় কাজ করার সময় শ্রমিক টিঠন মিয়ার হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সহকর্মী শ্রমিকরা অ্যাসেম্বলী পয়েন্টে জড়ো হন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ বিকেল ৫টায় কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।

রবিবার (১১ মে) মধ্যাহ্ন বিরতির পর কারখানার উৎপাদন ফ্লোরে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সাঈদ শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদা ইমরোজ বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শ্রমিক টিঠন মিয়ার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’

এদিকে, কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের প্যাকিং সেকশন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি)। এখানে গরম লেগে স্ট্রোক করার কোনো কারণ নেই।

টিঠন মিয়া নেত্রকোনা জেলা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর (দলপারামপুর) গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই কারখানার ফিনিশিং শাখার সাধারণ অপারেটর (প্যাকার) পদে চার বছর যাবত কর্মরত ছিলেন।

নিহত শ্রমিকের সহকর্মীরা জানান, মধ্যাহ্ন (লাঞ্চ) বিরতির পর টিঠন মিয়া সেকশনে এসে কাজে যোগ দেয়। হঠাৎ তার বুকে ব্যথা অনুভব হলে সহকর্মীরা তাকে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাওনা চৌরাস্তায় আল হেরা হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। সেখানে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিকেল ৫টায় মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রমিকরা আরো জানান, অসুস্থ শ্রমিককে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলা রয়েছে। তাদের অবহেলার কারণে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাদের সহকর্মী টিঠন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর শ্রমিকরা কারখানার বাহিরে নিহত শ্রমিকের সকল পাওনা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

পরে কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সাঈদ শিকদার শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে শ্রম আইন অনুযায়ী সকল পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা শান্ত হয়। পরে কারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিহত শ্রমিকের মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

জেএল ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক কারখানার অপারেশন সেকশনের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) দুশান্তা কুমার বলেন, ‘আমাদের ওই প্যাকিংম্যান টিঠন মিয়া লাঞ্চে করে কারখানায় প্রবেশ করে। আমি তার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, হঠাৎ টিঠন মিয়ার বুকে ব্যথা ওঠে এবং শরীর ঘেমে যায়। পরে সে তার সহকর্মীদের সঙ্গে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে বুকে ব্যথার কথা বললে তাকে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ দেয়। চিকিৎসক বলেছেন, ঔষধ খাওয়ার পরে সে বলল সে ভালো আছে। ১০ মিনিট পর আবার বুকে ব্যথার কথা জানালে কারখানার মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক বলে তুমি এখন সুস্থ আছো, স্বজনদেরকে খবর দিয়ে বলো তোমাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে। অফিস থেকে তার বাড়িতে যোগাযোগ করার আগেই টিঠন মিয়ার স্বজনেরা কারখানায় চলে আসে। ততক্ষণে তার ব্যথা আরো বেড়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মাওনা চৌরাস্তা আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘কারখানার পক্ষ থেকে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য যদি এ কারখানায় চাকরি করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে তাকে চাকরি দিয়ে দিবে। তাছাড়া শ্রম আইন অনুযায়ী তার সকল পাওনা পরিশোধ করা হবে।’

জেএল ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সাঈদ শিকদার বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার বিষয়ে শ্রমিকরা যে অভিযোগ জানিয়েছে তা সঠিক নয়। প্যাকিংম্যান টিঠন মিয়া অসুস্থতাবোধ করার সঙ্গে সঙ্গেই কারখানার ব্যবস্থাপনায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশ ২-এর ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘শ্রমিক মৃত্যুর খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ওই কারখানায় গিয়ে জানতে পারে অতিরিক্ত গরমে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই শ্রমিক মারা যায়। মৃত্যুর খবরে শ্রমিকরা উত্তেজিত হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ নিহত শ্রমিকের সকল ক্ষতিপূরনের আশ্বাস দিলে তারা শান্ত হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাকে দ্রুত স্থানীয় মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতালে পাঠায়। ওই হাসপাতাল থেকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করলে জরুরি বিভাগের চিকিসক ওই শ্রমিককে মৃত ঘোষণা করেন।’

জেএল ফ্যাশন লিমিটেড পোশাক কারখানা জয়দেবপুর থানাধীন বানিয়ারচালা (বাঘের বাজার) এলাকার সাফারি পার্ক সড়কে অবস্থিত। এ কারখানার বিভিন্ন সেকশনে ২,৭৫০ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

পাংশায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু, আহত ৪
ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে ডিআইইউতে সেমিনার
‘শিল্পীর দূরদৃষ্টিতে ফেলনা বলতে কিছু নেই’
উখিয়ায় জামায়াতের পথসভায় জনস্রোত
বিএনপি ক্ষমতার রাজনীতি করে না: চন্দন

সর্বাধিক পঠিত

সালথায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গ্রেফতার
মৌলভীবাজারে পৃথক দুর্ঘটনায় ২জনের মৃত্যু
চাটমোহরে ভাঙা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র
শালিখায় বাড়ছে পাটকাঠির কদর

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close