বাগেরহাট মোল্লাহাটের নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. ইরাদুল মির্জার স্ত্রীর পর পর দুটি কন্যাসন্তান হওয়ার অপরাধে তাকে তালাক দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মো. ইরাদুল মির্জার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে দুই কন্যাশিশুকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. ইরাদুল মির্জার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে স্বামীর দায়িত্ব ও কর্তব্যের অবহেলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান ভুক্তভোগী নারী ফাতেমা আক্তার। তিনি বলেন আমার বাড়ি বাগেরহাট সদর থানাধীন নাটই খালী গ্রামে, একই উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মনিরুল মির্জার ছেলে এরাদুল মির্জার সঙ্গে পারিবারিকভাবে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে আমার বিবাহ হয়, বিবাহকালীন অভিযুক্ত স্বামী ইরাদুল মির্জা বেকার যুবক ছিলেন বলে জানান তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার।
তখন তিনি বাগেরহাট জজকোর্টে রাজস্ব খাতে কর্মরত ছিলেন, বিয়ের পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী ইরাদুল মির্জা স্ত্রীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, স্ত্রীর ইনকামেই চলতো তার সংসার, ভুক্তভোগী নারী আরো জানান তার স্বামী যখন যা আবদার করতেন সংসারের সুখের আশায় কষ্ট হলেও তা পূরণ করার চেষ্টা করতাম, স্বামী ইরাদুল মির্জার বাড়িতে পাকাঘর নির্মাণের জন্য এককালীন ১০ লক্ষ টাকা দিই এবং স্বামীকে সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রিঅপারেট পদে চাকরি হয়।
বর্তমানে সে মোল্লারহাট উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত আছেন। তিনি আরো বলেন আজ আমাদের ১৪ বছরের সংসার জীবনে তাজরিন জাহান (১০ বছর) ও তাসদিদা জাহান ৭ মাসের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে, সন্তানদের ভরণ-পোষণ আমি একাই বহন করে আসছি, আমার দ্বিতীয় সন্তানটি কন্যাসন্তান হওয়ায় আমার স্বামী ইরাদুল মির্জা আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন এবং আমার সন্তানসহ আমাকে ভাড়া বাসায় রেখে তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। দীর্ঘ এক বছর অপেক্ষার করে এই সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি। ভুক্তভোগী নারী আরো জানান তার স্বামী ইরাদুল মির্জার বিরুদ্ধে খুলনা পারিবারিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নম্বর ১৭৪/২৪, ও চেক ডিজঅনারের অপরাধে খুলনা আমলি আদালতে ও একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নম্বর ১১৮০/২৪।
ভুক্তভোগী নারী জানান মামলা করার পর থেকে তার স্বামী ক্রমাগত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে আসছেন, অবশেষে অভিযুক্ত স্বামী ইরাদুল মির্জা গত ২১ এপ্রিল ২০২৫ একটি তালাকের নোটিশ পাঠায়, পরবর্তী সময়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি আরো তিন মাস আগে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা পীর জঙ্গল ইউনিয়নের ৩নং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে মৃত আফজাল শেখের মেয়ে সালমা আক্তার ৪০ নামে এক নারীকে বিয়ে করেন বর্তমানে সে নারীকে নিয়েই সংসার করছেন।
এ দিকে আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি, আমার স্বামী ইরাদুল মির্জা বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গাল মন্দ করেন ও মামলা তুলে না নিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়, হুমকির বিষয়টি খুলনা সদর থানায় জানিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করি যার নম্বর ২৩১ সদর থানা খুলনা, তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা জাতির বিবেক আপনাদের মাধ্যমে একজন মুখোশধারী অপরাধীর চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরলাম।
কেকে/এএস