বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পৌর আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে রাস্তার অংশে প্রচীর নির্মাণ করেছে প্রভাবশালী এক পুলিশ সদস্য। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলম হোসেন রাস্তার ওপর অযাচিতভাবে প্রাচীর নির্মাণ করেছে। এতে রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়ায় জনভোগান্তির মুখে পড়েছে ওই পরিবারগুলো। এ বিষয়ে ভেড়ামারা পৌরসভায় প্রাচীর অপসারণের দাবিতে লিখিত আবেদন করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এএসআই আলম বর্তমানে খুলনা থানায় কর্মরত আছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ভেড়ামারার বামানপাড়া এলাকার টালু বিশ্বাসের প্লট আকারের জমি ক্রয় করেন একই এলাকার পুলিশের এএসআই আলম হোসেন, আয়কর আইনজীবী মনির উদ্দীন এবং নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পোর্ট অফিসার নাজমুল হক সিদ্দিকসহ অনেকেই। ২০১৮ সালে ওই জমিতে দ্বিতলবিশিষ্ট দালানঘর নির্মাণ করেন এএসআই আলম। পৌর এলাকায় বসতবাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পৌর আইনের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬ এবং স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন ২০০৯ অনুযায়ী ২ ফিট ৯ ইঞ্জি জায়গা ফেলে রেখে বসতবাড়ি নির্মাণের নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আলম তার জমির সীমানা অনুযায়ী দ্বিতলবিশিষ্ট দালানঘর নির্মাণ করেন।
পৌর আইন স্পষ্ট লঙ্ঘন জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, এ সময়ে পাশাপাশি বিল্ডিং নির্মাণ করেন আয়কর আইনজীবী মনির উদ্দীন এবং নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল। প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধ এবং তাদের ভোগান্তিতে রাখতে ২০২৩ সালে আলম কোনো কারণ ছাড়াই অযৌক্তিক ভাবে ঘরের ওয়ালের পাশে আরো একটি সীমানা প্রচীর জোরপূর্বক নির্মাণ করেন। যার কারণে চলাচলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার।
এ বিষয়ে আয়কর আইনজীবী মনির উদ্দীন মনির বলেন, পৌর আইন মেনেই আমাদের বসতবাড়ি নির্মাণ করেছি। কিন্তু আলম পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পৌর আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে পুরো জমির ওপর দালানঘর নির্মাণ করেছে। আবার তিনি অযৌক্তিকভাবে সীমানা ওয়ালের পাশে আরেকটি হাঁটু সমান প্রাচীর নির্মাণ করে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী করে ফেলেছে। ওই প্রাচীর উচ্ছেদ এবং অপসারণের দাবিতে ভেড়ামারা পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কোনো কারণে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী কর্মকর্তা নাজমুল হক সিদ্দিকী বলেন, আলম পুলিশের একজন এএসআই। তিনি বর্তমানে খুলনা থানায় কর্মরত আছে। তিনি অপ্রয়োজনীয় একটি ওয়াল নির্মাণ করে অশান্তি সৃষ্টি পাঁয়তারা করছে। যা কাম্য নয়। জনজীবন স্বাভাবিকের স্বার্থে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ওই ওয়াল উচ্ছেদ করা একান্ত প্রয়োজন।
এ বিষয়ে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলম সীমানা প্রচীর নির্মাণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি টাকা দিয়ে জমি কিনেছি। এখন ওই জমির দাম ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা শতক। পৌর আইন অনুযায়ী ২ ফিট জায়গা ফেলে রাখতে হয়। এটা আমি জানি। আমি টাকা দিয়ে জমি কিনে ওই জায়গা কেন ফেলে রাখব। এক্ষেত্রে পৌর আইন দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। আমার টাকা দিয়ে কেনা জমিতে কেউ রাস্তা করুক এটা আমি চাই না।
কেকে/এএস