সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সুফিয়া বেগম। জনপ্রতিনিধিদের কাছে নিজের অসহায়ত্বের কথা বললেও মেলেনি কোনো সহায়তা। মাথার ওপর ভেঙে পড়া শঙ্কা নিয়ে কোনোমতে দিন পার করছেন তিনি।

সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে দেখা মেলে প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেন ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে।
 
উপজেলার রায়গঞ্জ পৌর সভার বেতুয়া গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া বেগম। তার স্বামী গোলাম হোসেন একসময় বহুতল ভবনে রঙের কাজ করে চালাতেন সংসার। একমাত্র মেয়েকেও দিয়েছেন বিয়ে। একসময়ের উপার্জনক্ষম স্বামীর চিকিৎসা আর সংসারের খরচ জোগাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অন্যের কাছে অর্থ চেয়ে সহায়তা চাচ্ছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় অসহায় এই দম্পতির সঙ্গে তারা জানায়, অভাবের সংসারে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। হঠাৎ স্টোকজনিত কারণে গোলাম হোসেন প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছে। স্ত্রী সুফিয়া বেগমের বয়স্ক ভাতা আর অন্যের কাছে হাত পেতে সামান্য অর্থেই কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। যেখানে অনাহারে নিজের টিকে থাকায় দায় সেখানে  প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছেন প্রায় পঁয়ষট্টি বছরের এ বৃদ্ধা। কেউ সাহায্য করলে জোটে খাবার, নইলে থাকতে হয় অনাহারে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সবুজ শেখ জানান, পরিবারটি খুব অসহায়। টাকার অভাবে প্রায় ৬ মাস ধরে বিছানায় কাতরাচ্ছেন প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেন। হৃদয়বান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে হয়তো বেঁচে যাবে একটি জীবন। স্ত্রী  ফিরে পাবে স্বামীর ছায়াতল।

স্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, অন্যের দুয়ারে হাত পেতে আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি স্বামীর উন্নত চিকিৎসা। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোনো সুফল মেলেনি। গত ছয় মাস ধরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। কোমর থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবশ হয়ে গেছে। এছাড়া প্রেশার স্টকসহ অন্যান্য রোগব্যাধির কারণে বিছানা এখন নিত্যসঙ্গী। এ দিকে চিকিৎসা ব্যয় কত হতে পারে জানতে চাইলে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসায় অন্তত ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ জানান, প্রতিবন্ধী গোলাম হোসেনের বিষয়ে আমি অবগত আছি। খুব দ্রুতই তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়াও তিনি আবেদন করলে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

কেকে/এএস