ফরিদপুর ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লুকদী গ্রামে ইয়াবা বিক্রিতে দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু'দল গ্রামবাসীর মধ্যে কয়েক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেলে দফায় দফায় সংঘর্ষে এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন লোক আহত হয়েছে। আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে শাহমুল্লুকদী গ্রামের মোল্লা আবুল ফয়সাল জানান, আমাদের গ্রামের বেলায়েত মুন্সির ছেলে আরিফ মুন্সি দীর্ঘদিন যাবত ইয়াবা সেবন ও বিক্রি করে আসছে। রমজানের মধ্যে আমার ভাই মনিরুল মোল্লা আরিফ মুন্সিকে ইয়াবা বিক্রি ও সেবন করতে নিষেধ করে।
এ ঘটনার জের ধরে ঈদের দিন (সোমবার) রাত অনুমানিক ৯টার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ভাই মনিরুল বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ইয়াবা বিক্রেতা আরিফ, রুবেল, ইমরান, বেলায়েত, শাখাওয়াত সহ আরো কয়েকজন সংঘবদ্ধভাবে মনি মোল্লাকে একা পেয়ে চাপাতি দিয়ে ২৩টি কোপ দেয়। বর্তমানে সে ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান ওই ঘটনার জের ধরে বুধবার বিকেল থেকে মনি মোল্লার বাবা আব্দুল আজিজ টুকু মোল্লা ও আরিপ মুন্সি দলের শাফি মোল্লার লোকজন ঢাল সরকি,লাঠি প্রভৃতি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খালের দুই পাড়ে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় আব্দুল আজিজ টুকু মোল্লা বলেন, শাফি মোল্লার দলের বেলায়েত মুন্সী ডলার দেখিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করে চোট দেয়। তার ছেলে আরিফ মুন্সি ইয়াবা বিক্রি করে। আমার ছেলে মনি মোল্লা ইয়াবা বিক্রি করতে বাধা দিলে ঈদের দিন রাতে তাকে মারধর করে। আজকে বুধবার তারা আমাদের উপরে আবারো হামলা চালায়। পরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় আমার দলের ১০/১৫ জন লোক আহত হয়।
এ ঘটনায় শাফি মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টুকু মোল্লার সাথে আমাদের বিরোধ চলে আসছিল। তারা মাঝে মধ্যেই আমাদের লোকজনকে মারধর করে। আজকে তারা আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। পরে আমরাও পাল্টা হামলা চালিয়েছি। আমার দলের ১০/১২ জন লোক আহত হয়।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লুকদী গ্রামে পূর্ব শক্রতার জের ধরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিথি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষ অভিযোগ করে নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
কেকে/এআর