মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, তীরে ফিরছেন জেলেরা
হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
🕐 ৬:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২৪
মৎস্য প্রজনন বৃদ্বির লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন গভীর সমুদ্রে সকল ধরনরে মাছ শিকার বন্ধ থাকবে। সরকারের এ নিষেধাজ্ঞা মানতে ইতিমধ্যে সমুদ্র থেকে তীরে ফিরতে শুরু করছে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা।
সূর্যমূখী ঘাটের জেলে জলিল উদ্দিন (৪৫) বলেন, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে ট্রলার নিয়ে সকালে ঘাটে চলে এসেছি। রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তাই আর সাগরে যাবো না। আগামী কয়েকদিন জাল বোনা, ট্রলার মেরামত শ্রমিক হিসেবে ঘাটে থেকে উপার্জন করতে হবে। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আবার সাগরে যাবো।
তিনি আক্ষেপ করে জানান, এখন ইলিশ মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। ঠিক এসময়ে ৬৫ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের এ আদেশ মানতে গিয়ে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। কিন্তু এসময় ভারতের জেলেরা এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এবিষয়ে আমাদের প্রশাসনের আরো বেশী ভ‚মিকা নেওয়া উচিত।
হাতিয়ার সূর্যমূখী ঘাটের মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক জানান, হাতিয়ার ৪০টি ঘাটের প্রায় ৫শতাধিক বড় বড় ফিসিং ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে। নিষেধাজ্ঞার কারনে এসব ট্রলার রাতেই ঘাটে ফিরে আসবে। ইতিমধ্যে অনেক ট্রলার গতকাল ও আজ ঘাটে ফিরে এসেছে। এ বছর ইলিশ মৌসুমের প্রথমে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে জেলেরা। ৬৫ দিন সবাইকে তীরে থাকতে হবে। অনেকে বেকার সময় পার করবে।
হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, হাতিয়াতে গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করার মত ট্রলার রয়েছে প্রায় ৫শতাধিক। এসব ট্রলারে ২০জন করে হলেও ১০ হাজার জেলে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এতে ১০ হাজার জেলে সবাই বেকার হয়ে পড়বে। তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চলা অনেকটা কঠিন হবে। আবার এসব জেলের অনেকে নিবন্ধন না থাকায় সরকারি সুবিধাও পাবে না।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়াতে প্রায় ১ লক্ষ লোক জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। নিবন্ধন না থাকার কারণে জেলেরা সরকারের যে সকল সুযোগ সুবিধাগুলো রয়েছে তা থেকে বঞ্চিত হয়। আবার কিছু নিবন্ধিত জেলে রয়েছে যারা জেলে পেশার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান জানান, হাতিয়ার অনেক ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করে। এই ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকবে যা আগেই জেলেদের অবহিত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ঘাটে গিয়ে জেলে ও ট্রলার মালিকদের সাথে কথা বলে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নৌ-পুলিশ কোস্ট গার্ড সহ মৎস অফিস অভিযান পরিচালনা করবে।