ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

একে একে নিভছে দেউটি

বাতিঘর ডেস্ক
🕐 ১২:০৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ০১, ২০২১

একে একে নিভছে দেউটি

মৃত্যুর মিছিলে একের পর এক যুক্ত হচ্ছেন রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা, যা বেদনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের মতো মহামারী করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন দেশের নামি-দামি ও খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিরা। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চলে গেলেন কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ব্যাংকিং সেক্টরের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক এটিএম শামসুজ্জামান। এই তিন গুণীজনকে নিয়ে আজকের আয়োজন। 

এটিএম শামসুজ্জামান

আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান (এটিএম শামসুজ্জামান) অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয় বার। এছাড়া ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আয়োজনে তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।

প্রারম্ভিক জীবন
এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেন ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। তার পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।

চলচ্চিত্র জীবন
এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবনের শুরু ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরির বিষকন্যা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে। এছাড়াও খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, সুভাষ দত্তদের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জলছবি (১৯৭১) চলচ্চিত্রের জন্য। তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু করেন। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের নয়নমণি চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনা আসেন তিনি। তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে যাদুর বাঁশি, রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৭ সালে তার নিজের লেখা কাহিনিতে আফতাব খান টুলুর দায়ী কে? চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবন
এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনী জামান। এই দম্পতির ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ছেলে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশল নিজ বড় ভাই এটিএম কামালুজ্জামান কবিরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। হত্যাকা-ের পর এটিএম শামসুজ্জামান নিজেই ছেলে কুশলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হত্যার অভিযোগে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশলকে ২০১৩ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

মৃত্যু
এটিএম শামসুজ্জামান গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। তার মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে সমাহিত করা হয়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper