গাজীপুরে জোড়া খুন
স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ায় মা-মেয়েকে হত্যা
গাজীপুর প্রতিনিধি
🕐 ৪:০৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২১

গাজীপুরে মা ও শিশু কন্যাকে গলা কেটে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুই ঘাতককে গ্ৰেফতার ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর দফতরে সাংবাদিক ডেকে এ তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. জাকির হাসান।
গ্রেফতাররা হলো- গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সালদিয়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম খান (২১) এবং একই এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মো. মহিউদ্দিন ওরফে বাবু (৩৫)।
অপরদিকে নিহত ফেরদৌসি (৩০) গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নরুন বাজার এলাকার বাসির উদ্দিন বেপারীর মেয়ে ও তার শিশু কন্যা তাসমিয়া (৫)।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্যে, নিহত ফেরদৌসী গার্ডিয়ান ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি গ্রেফতার আসামি বাবুর স্ত্রী লিমাকে একই কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। সম্পর্কে ফেরদৌসীর ভাতিজি লিমা। চাকরি পাওয়ার পর বাবুর সঙ্গে লিমার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তাদের বিচ্ছেদে ফেরদৌসীকে দায়ী মনে করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাবু। হত্যাকাণ্ডে সহযোগী হিসেবে ফেরদৌসির পূর্ব পরিচিত বীমা গ্রহীতা জাহিদুল ইসলামকে সঙ্গে নেয় বাবু।
গত ২৪ নভেম্বর বিকেলে এক গ্রাহককে বীমা করানোর নাম করে ফেরদৌসীকে গাজীপুর সদর থানাধীন দেশীপাড়া এলাকায় ডাকে জাহিদুল। কথা অনুযায়ী সন্ধ্যার পর জাহিদুলের সঙ্গে দেখা হয় ফেরদৌসীর। তখন সঙ্গে তার মেয়ে তাসমিয়া ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর ফেরদৌসী কিছু বুঝে উঠার আগেই জাহিদুল ও বাবু তার গলায় ছুরি দিয়ে দুটি আঘাত করে। শিশু কন্যা তাসমিয়া এ দৃশ্য দেখে কান্নাকাটি শুরু করে। তখন শিশু তাসমিয়ার গলায় ছুরি চালায় জাহিদুল। এরপর মোটরসাইকেলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঘাতকরা।
উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হাসান আরো জানান, স্থানীয়রা নারী ও শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই ইজ্জত আলী বাদী হয়ে অচেনা ঘাতকদের অভিযুক্ত করে সদর থানায় মামলা করেন। জোড়া খুনের ঘটনা সামনে আসার পরই পুলিশের একাধিক দল হত্যার রহস্য উদঘাটনে ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কালীগঞ্জের সালদিয়ার নিজ বাড়ি থেকে প্রথমে জাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় জাহিদুলের হাতে কাটা চিহ্ন দেখা যায়। পরে জাহিদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর ঘাতক বাবুকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাঙ্গালিয়া এলাকার একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি এবং মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
