বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ      ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’      নির্বাচনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী : ইসি সচিব      ৪৫তম বিসিএস নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ, সুপারিশ পেলেন ৫৪৫ জন      বন বিভাগে সুফল প্রকল্পে দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার দাম্ভিকতা      ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হলে কৃষি অর্থনীতি টেকসই হবে : কৃষি সচিব      ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা      
রাজধানী
প্রেমের ফাঁদ, ব্ল্যাকমেইল, শেষে ২৬ টুকরো লাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১:০৮ পিএম আপডেট: ১৫.১১.২০২৫ ১:১৯ পিএম
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দশ লক্ষ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর (৩৩)। এ জন্য এক মাস আগে আশরাফুলের সাথে মিথ্যা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন শামীমা। পরে তাকে ঢাকায় এনে খুন করে লাশ ২৬ টুকরো করেন জরেজ মিয়া ও শামীমা।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩’-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।

ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লার লাকসামের বড় বিজরা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে শামীমা আক্তারকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩।’

‘গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত আটটায় ব্যবসায়ী আশরাফুল হক তার ব্যবসায় সংক্রান্ত পাওনা আদায়ের লক্ষে একই গ্রামের বাসিন্দা বন্ধু জরেজুল ইসলামের সাথে রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা দেন। পর দিন সকাল থেকে আশরাফুলের পরিবার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পায়। পরবর্তী গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টে পানির পাম্প সংলগ্ন দুইটি নীল রংয়ের ড্রামের ভেতর অজ্ঞাত নামা পুরুষের ২৬ খণ্ডের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আঙ্গুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে সিআইডি নিশ্চিত হয় লাশটি নিখোঁজ ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের।’

ফায়েজুল আরেফীন বলেন, ‘ওই দিন রাতেই নিহতের বোন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলামকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে এই ঘটনায় তদন্তে নেমে জরেজুলের প্রেমিকা শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, নিহত আশরাফের রক্তমাখা সাদা রংয়ের পায়জামা-পাঞ্জাবীসহ হত্যার কাজে ব্যবহৃত দড়ি, স্কচটেপ, একটি গোলগলা গেঞ্জি এবং একটি হাফ প্যান্ট একটি বস্তার ভিতর মুখবাঁধা অবস্থায় শনির আখড়ার নূরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শামীমার সঙ্গে জরেজের এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জরেজ শামীমাকে জানায়, তার এক বন্ধুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্লাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। জরেজ এই টাকার ৭ লাখ টাকা নেবে, আর শামীমা ৩ লাখ টাকা পাবে। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমা নিহত আশরাফুল ইসলামের সাথে একমাস আগে থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করে তার প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। মোবাইল ফোনে তাদের নিয়মিত অডিও এবং ভিডিও কলে কথা চলতে থাকে। পরবর্তী গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত আটটায় জরেজ ভিকটিম আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হন। ঢাকায় আসার পর গত বুধবার (১২ নভেম্বর) জরেজ ও আশরাফুল শামীমার সাথে দেখা করে ঢাকার শনির আখড়ার নূরপুর এলাকায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাসা ভাড়া করে তিনজন একত্রে ভাড়া বাসায় ওঠেন।

ফায়েজুল আরেফীন বলেন, ‘রংপুর থেকে ঢাকায় আসার আগে জরেজ তার প্রেমিকা শামীমা আক্তারকে ফোনে জানান, আশরাফুলের সাথে সে যেন অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে এবং সেই ভিডিও দেখিয়ে যাতে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভুক্তভোগী আশরাফুলকে মালটার শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হালকা অচেতন করেন শামীমা। যাতে বাইরে থেকে জরেজ অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করলে আশরাফুল তা বুঝতে না পারে। পরবর্তী যখন তারা একান্ত সময় কাটায়, তখন জরেজ বাইরে থেকে ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিও শামীমার মোবাইলে ধারণ করা হয়, যা বর্তমানে উদ্ধারকৃত মোবাইলে রয়েছে।’

শামীমার বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ আশরাফুলের হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেন। জরেজ অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে উত্তেজিত হয়ে অচেতন থাকা ভিকটিম আশরাফকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকানো থাকায় শ্বাস না নিতে পেরে ঘটনাস্থলেই আশরাফুল মারা যায়।  ’

ফায়েজুল আরেফীন জানান, আশরাফুলের মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্য গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে জরেজ নিকটস্থ বাজার থেকে চাপাতি ও ড্রাম কিনে আনে। জরেজ চাপাতি দিয়ে লাশ ২৬ টুকরা করে দুইটি নীল রংয়ের ড্রামে ভরে রাখে। পরবর্তী দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে একটি সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি সিএনজিতে নিয়ে দুপুর দুইটা ৫২ মিনিটে বাসা থেকে রওনা করে। পথিমধ্যে তারা ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা চিন্তা করে সিএনজি পরিবর্তন করে অন্য একটি সিএনজিতে রওনা হন। বিকাল তিনটা ১৩ মিনিটে হাইর্কোট মাজার গেইটের নিকট এলে রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে লাশভর্তি ড্রামদুটি হাইকোর্টের পানির পাম্প সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে একটি বড় গাছের নিচে ফেলে তারা অতিদ্রুত হাইকোর্ট এলাকা থেকে একটি অটো যোগে সায়েদাবাদ চলে যান। সায়েদাবাদ যাওয়ার পর জরেজ শামীমাকে কুমিল্লায় তার নিজ বাড়িতে চলে যেতে বলেন এবং তিনি রংপুরে তার নিজের বাড়িতে চলে যাবে বলে শামীমাকে জানায়। সে অনুযায়ী শামীমা কুমিল্লায় তার নিজ বাড়িতে যান এবং জরেজের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’

‘শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্লাকমেইল করে টাকা উপার্জন করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তবে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ব শত্রুতা আছে কি না তা মূল আসামি জরেজকে জিজ্ঞাসা জানা যাবে।’

ইতোমধ্যে এই হত্যাকান্ডের মূল আসামি জরেজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ডিবি।

কেকে/এমএ
আরও সংবাদ   বিষয়:  প্রেমের ফাঁদ   ব্ল্যাকমেইল   ২৬ টুকরো লাশ  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ
তরুণ, যুব ও মেধাবী ছাত্র সমাজকে রক্ষায় সুস্থ সংস্কৃতি জরুরি: রায়হান সিরাজী
৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’
চালাক ছাত্রী

সর্বাধিক পঠিত

নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
চাঁদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা রয়েছে: তানভীর হুদা
দুই ট্রলারসহ সেন্টমার্টিনে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
গাজীপুরে রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
এশিয়ান টাউনস্কেপ অ্যাওয়ার্ডসে সম্মাননা পেল রাজউক

রাজধানী- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close