বান্দরবানের লামায় প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে লামা উপজেলা। তাছাড়াও আলীকদম উপজেলায়ও দিনদিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে বলে জানায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে চরম সংকটে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শয্যা-সংকটে মেঝেতে চলছে চিকিৎসা, ২২টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক মাত্র ৫ জন। প্যাথলজি বিভাগ,মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ২ জনের পরিবর্তনের কর্মরত আছেন মাত্র একজন। রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে ১জনের পদ থাকলেও কর্মরত নেই কেউ। এছাড়া ৬ জন কনসালটেন্ট ও ১২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। উপসহকারী মেডিকেল অফিসারদের ৪টি পদের মধ্যে ৩ জন কর্মরত।
অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও বেহাল দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে অচল, অন্যটি ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় চলছে। এছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সাম্প্রতিক বন্যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনসহ ল্যাবের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। নেই জেনোরেটর ফলে অনেক রোগী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল থাকলেও পর্যাপ্ত ঔষুধ ও ডাক্তারের অভাবে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে পাশের চকরিয়া উপজেলায় চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়, যা তাদের জন্য আর্থিকভাবে কষ্টসাধ্য। অনেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বা মৃত্যুর মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা নাদিম বলেন, বিগত ২ মাসে শুধুমাত্র লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনডোর ও আউটডোরে ২২৯ জন ডেঙ্গু রোগী সেবা নিয়েছে। তবে কোন রোগী মারা যায়নি। প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন এবং ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বর্তমানে হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে, তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, সারা বাংলাদেশে যখন বর্ষার সিজন শুরু হয় তখন ডেঙ্গু আর ম্যালেরিয়া রোগী বৃদ্ধি পায়। সাধারণত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ রোগ ছড়ায়। কিন্তু এখন নভেম্বর মাসে এসেও এর প্রভাব রয়ে গেছে। বাড়ির পাশে, জঙ্গলে, খাল-বিল ও নালায় জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। তাই কোথাও পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।
কেকে/এআর