চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার সংযোগস্থলে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে তার এ পরিদর্শনকালে সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ ও উভয় প্রান্তের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সচিব সেতুর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের (এন-১) ভবেরচর হতে শুরু করে চাঁদপুরের মতলব উত্তর পর্যন্ত প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্ট ও নদীশাসন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ তিনি সময় প্রকল্পের প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ (যেমন- নদীর গভীরতা, স্রোতের গতি ও ভূতাত্ত্বিক অবস্থা) সঠিকতা চিহ্নিত করার জন্য গুরুত্বারোপ করেন।
পরিদর্শনকালে আবদুর রউফ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বৈষম্যহীন, ব্যয় সাশ্রয়ী কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই সেতুটি নির্মাণ। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি চাঁদপুরের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার। বর্তমানে সড়কপথে ঢাকার সাথে এই অঞ্চলের যে দীর্ঘ এবং সময় সাপেক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা, এই সেতুর মাধ্যমে তা কমবে এবং বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। বিশেষ করে, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষিজ পণ্যগুলো দ্রুত রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা প্রান্তিক চাষি ও ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেতুটি নির্মিত হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ কমাবে এবং এই অঞ্চলকে সরাসরি জাতীয় অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসবে।’
সচিব আশ্বাস দেন, জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বমানের প্রকৌশল ও পরিবেশবান্ধব নকশা অনুসরণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রকল্পের ডিটেইল্ড ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ সময় তিনি মতলব উত্তর অংশের বিদ্যমান সড়কের প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দেন।
পরিদর্শন শেষে সচিব সেতু বিভাগ, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, মতলব উত্তরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সাথে এ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং উপস্থিত সকলকে এই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে সেতু কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, এই সেতুটি হবে ১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চার লেন বিশিষ্ট ক্যাবল স্টেইড সেতু, যার স্প্যানের দৈর্ঘ্য বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ হবে।
কেকে/এমএ