ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ১০নং হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে পরিষদের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স ও ওয়ারিশান সনদের মতো জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। একই সঙ্গে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ভালুকা উপজেলার ১০নং হবিরবাড়ী ইউনিয়নে প্রায় ৬০ হাজার ভোটার রয়েছে। গত চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি দেখিয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ভালুকার ১০টি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন প্রশাসকের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম চললেও গত ৮ সেপ্টেম্বর হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য তোফাজ্জল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেন জেলা প্রশাসক।
তবে ৭নং ওয়ার্ড সদস্য হাফিজ উদ্দিন মৃধা দাবি করেন, তিনি পরিষদের ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান, তাই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তারই পাওয়ার কথা। এ নিয়ে তিনি প্রশাসক নিয়োগ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের আদেশ বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট করেন। পরে ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট প্রশাসক নিয়োগ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখেন এবং প্রক্রিয়াগত বাধা না থাকলে পরিষদের সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন মৃধার বরাবরে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পরিষদের দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ মানুষ ন্যূনতম প্রশাসনিক সেবাও পাচ্ছেন না। ফলে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স ও ওয়ারিশান সনদের মতো জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এ অবস্থায় চেয়ারম্যান পদে কেউ দায়িত্ব পালন না করায় পরিষদের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে। হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মুস্তাফিজুর রহমান জানান, “গত ১৫ অক্টোবর থেকে চেয়ারম্যান না থাকায় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ সব ধরনের জরুরি সেবা বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।”
এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, “ময়মনসিংহ জজ কোর্ট সহকারী কৌসুলী (জিপি) এর মতামত কপি পেয়েছি, দ্রুতই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন মৃধার বরাবরে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।”
কেকে/ আরআই