মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ ৫৪ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
রোববার (২ নভেম্বর) রাত সোয়া ৩টায় উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের মেয়ে সাথী বেগম বলেন, ‘রাত ১টায় শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তবে বিষয়টি আমি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টায় উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে ২ যুবক বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরবর্তীতে আমাদের বিল্ডিংয়ের ৪টি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুটপাট চালাতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতির ঘটনা। প্রায় নগদ ৩ লক্ষ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। যাবার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে চলে যায়।’
ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, ‘প্রথমে ডাকাত দলের ২ সদস্য কাটার দিয়ে জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ডাকাত দলের আরো ২২/২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।’
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, ‘আমার ৩ ছেলে দেশের বাহিরে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লক্ষ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি, এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা স্থানীয়রা এর সাথে জড়িত। এ বিষয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।’
ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, ‘আমরা ৫টায় বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাহির থেকে লক করা রুম থেকে আমরা তাদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি শেষে নির্বিঘ্নে চলে যায়।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘সকাল ৬টায় আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
কেকে/বি