কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সারাদিন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থমকে গেছে ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাহত হয়েছে হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। সন্ধ্যার পরও এলাকাজুড়ে একটানা অন্ধকারে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এদিকে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পিজিসিবি (PGCB) থেকে যতটুকু বিদ্যুৎ পায়, কেবল সেই পরিমাণ বিদ্যুৎই গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। বর্তমানে সমিতি এলাকায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ২৯ শতাংশ কম, অর্থাৎ সার্বিকভাবে ২৯ শতাংশ লোডশেডিং চলছে।
আরও বলা হয়েছে, দাউদকান্দি (তিতাস) গ্রীডে বিদ্যুৎ এর মোট চাহিদা ১৪১ মেগাওয়াট, সরবরাহ ১০০ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ মেগাওয়াট বা প্রায় ২৯ শতাংশ। এই হিসাবে প্রতিটি সাবজোনে আনুপাতিকভাবে বিদ্যুৎ বণ্টন হওয়ার কথা। কিন্তু মেঘনায় সেই হিসাবের সঙ্গে বাস্তব চিত্রের বড় অমিল দেখা গেছে।
মেঘনা সাবজোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) প্রকৌশলী মো. আল মামুন সবুজ বলেন, “মেঘনায় বর্তমানে বিদ্যুৎ এর চাহিদা ১২ মেগাওয়াট, কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ মেগাওয়াট। ফলে প্রতি ঘণ্টায় চারটি ইউনিয়নের লাইন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। মোটামুটি ৬৬ শতাংশ লোডশেডিং চলছে।”
ফিডারভিত্তিক হিসাবেও এই ঘাটতি স্পষ্ট। মেঘনা উপজেলার মোট ৬টি ফিডারের মধ্যে বুধবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ৪টি ফিডার বন্ধ এবং মাত্র ২টি ফিডার চালু ছিল। অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় সারাদিন বিদ্যুৎ ছিল না।
হিসাবে দেখা যায়, যদি সমগ্র সমিতি এলাকায় ২৯ শতাংশ ঘাটতি থাকে, তবে মেঘনায় ১২ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে অন্তত ৮.৫ মেগাওয়াট সরবরাহ পাওয়ার কথা। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৩.৫ মেগাওয়াট ঘাটতি বা প্রায় ৩০ শতাংশ লোডশেডিং হতে পারত। কিন্তু বাস্তবে বরাদ্দ যদি হয় মাত্র ৪ মেগাওয়াট, তাহলে ঘাটতি দাঁড়ায় ৮ মেগাওয়াট যা ৬৬ শতাংশের সমান।
এই অস্বাভাবিক ফারাক স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে, “ মেঘনায় বরাদ্দ কি ইচ্ছাকৃতভাবে কম দেওয়া হচ্ছে, নাকি বণ্টনের হিসাবেই গরমিল রয়েছে?”
কেকে/বি