শুধু পড়াশোনা নয়, শিক্ষার্থীদের সততা ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার পরামর্শ দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “ছোটবেলা থেকেই সঠিক শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠতে হবে। শিক্ষা ও দক্ষতাকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কিন্তু হাজার কোটি টাকার মালিকরাও আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সহায়-সম্পদের কোনো দাম নেই।”
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার রাজদর্শন হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকার অভিষেক ও ছাত্রবৃত্তি-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা আরো বলেন, “শিক্ষাটাকে কখনো ছেড়ে দেবে না। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে গেলে শুধু নিজেরই নয়, পরিবারেরও বড় সংকট তৈরি হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।”
তিনি শিক্ষায় বিনিয়োগকে জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “শিক্ষায় বিনিয়োগ মানে শুধু শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা নয়, বরং পুরো জাতির অগ্রযাত্রায় অবদান রাখা। ঢাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ঐক্য ও জ্ঞানের প্রতি এগিয়ে যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।”
অনুষ্ঠানে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এখন চিকিৎসকরা ঢাকার বাইরে যেতে চান না। এমনকি অদূর কেরানীগঞ্জ থেকেও রাজধানীতে আসতে তদবির আসে। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো অনুন্নত জেলায় মানুষের জন্য একটি মেডিকেল কলেজ এখন সময়ের দাবি।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখনো অনুন্নত জেলা। এর উন্নয়নে জেলার প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। জেলা সমিতিগুলোকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সম্মিলিত স্বার্থে কাজ করতে হবে।” তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষকে নিজেদের ভেতরের বিভেদ ও বিরোধ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উচ্চশিক্ষায় কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোট ৩১২টি বৃত্তি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে অনার্স স্তরে ২৫টি, এইচএসসি স্তরে ১৮২টি এবং এসএসসি স্তরে ১০৫টি বৃত্তি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এসব বৃত্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জনে অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ও ঢাকার সভাপতি ও বাঞ্ছারামপুর থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এম এ খালেক পিএসসি। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সচিব এহসানুল হক, অতিরিক্ত সচিব বাবুল মিয়া, সাবেক সচিব মো. মিজানুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির, মেজর জেনারেল (অব.) কামরুজ্জামান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, শরীফুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রফিক সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক খোকন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা।
উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট মীর হালিম, লিটন সরকার, জালাল উদ্দীন বাদল, ম.ম ইলিয়াছ, ইব্রাহিম সরকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমিতির অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ শামীম।
কেকে/এআর