ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আব্বা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে চাঞ্চল্যকর কামাল হত্যা মামলার প্রধান পলাতক আসামি কুখ্যাত সন্ত্রাসী কামরুল। বিদেশ থেকে ফিরে সে গড়ে তুলেছে নতুন সন্ত্রাসী বাহিনী।
স্থানীয়রা জানায়, আরেক আলোচিত হত্যাকান্ড পুলিশ সোর্স সাইফুল হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়া সন্ত্রাসী জানে আলম, কামরুলের বড়ভাই যুবদল নেতা শামীম এবং ছোটভাই রনিকে সঙ্গে নিয়ে খেজুরবাগ এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে কামরুল। প্রতিদিন নতুন গড়ে ওঠা ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায় করছে তারা।
এরই মধ্যে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পারগেন্ডারিয়ার ড্রেজার ব্যবসায়ী আতিককে টার্গেট করে কামরুল। এ ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যায় খেজুরবাগ সাহেব গলির মুখে দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পর রাতের দিকে কামরুল বাহিনী পারগেন্ডারিয়া বালুর মাঠে প্রবেশ করে ব্যাপক গুলি বর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং অসংখ্য দোকানপাট ভাঙচুর করে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী কিশোর ফয়সাল জানান, খেজুরবাগ সাতপাখির শামীম, কামরুল, রনি ও জানে আলমসহ অনেকেই পিস্তল, বোমা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নেয়। তারা বেশ কিছু দোকান ও অফিস ভাঙচুর করে।
চা দোকানদার জয়নাল আবেদিন মন্টুর ভাষ্যমতে, কাইল্লা সুমন, সাদ্দাম, সুমন, নজু, কামরুল, রনি সহ একটি বড় গ্রুপ নিরীহ মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় এবং মারধর করে।
স্থানীয় বাদশা মিয়া অভিযোগ করেন, বিএনপির অফিসও ভাঙচুর করেছে কামরুল ও তার সহযোগীরা।
রতন নামে আরেকজন জানান, খেজুরবাগ সাতপাখির কিছু উগ্র সন্ত্রাসী পারগেন্ডারিয়ায় চাঁদা আদায়ের জন্য মহড়া চালিয়েছে। এটি মূলত এলাকায় তাদের শক্তি জানান দেওয়ার কৌশল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আজিজুল মেম্বারের ছোটভাই কামাল হত্যার প্রধান আসামি কামরুল। ওই হত্যাকাণ্ডের পর সে বিদেশে পালিয়ে যায়। এখন আবার ফিরে এসে এলাকায় প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস দখল করে ডেভেলপার অফিস খুলে বসেছে। কেউ তার কাছ থেকে মালামাল না নিলে তার ওপর নেমে আসে জুলুম অত্যাচার। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঘনবসতিপূর্ণ শুভাঢ্যা ও তার আশপাশের এলাকায় এখন আতংকের নাম কামরুল! আওয়ামী আমলে যে এলাকায় আব্বা বাহিনীর একক আধিপত্য ছিল, সেখানে এখন নতুন করে রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করছে কামরুল বাহিনী।
অভিযোগ রয়েছে, পারগেন্ডারের রানা, মার্বেল, মামুনসহ একাধিক খুনের পেছনে রয়েছে কামরুল ভাইদের হাত। সাত্তার, পাপ্পু, জুয়েল, সোহাগ ও নাগিন জাহাঙ্গীর র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হলেও বিদেশে পালিয়ে গিয়ে বেঁচে যান কামরুল। হত্যা মামলায় বিচারের মুখোমুখি না হয়েও কীভাবে আবার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন কামরুলরা এমন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আক্তার হোসেন জানান, ড্রেজার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কেকে/ আরআই