নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ভেসে থাকা অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে র্যাব। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে র্যাব-৫-এর একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে সিংড়া থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
ঘটনার পরপরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে র্যাব। তদন্তের এক পর্যায়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত ৮ টার দিকে সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের বড়িয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলা চৌগ্রাম ইউনিয়নের বড়িয়া গ্রামের ফারুক প্রামানিকের ছেলে সাগর প্রামানিক (১৮) ও একই গ্রামের মনসের প্রামানিকের ছেলে সুলতান প্রামানিক (১৯)
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, নিহত ব্যক্তির নাম জিহাদ, যার সঙ্গে তাদের চার মাস আগে পরিচয় হয়। আড্ডা দেওয়া এবং গাঁজা সেবনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সম্প্রতি আর্থিক সংকটে পড়েন সাগর, যার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সুলতানও একই ধরনের অর্থকষ্টে ছিলেন।
দুই সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা করে তারা জিহাদকে হত্যার মাধ্যমে তার ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী,বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় তারা চৌগ্রাম বাজারে জিহাদের সঙ্গে দেখা করে এবং পরে সিংড়া বাজার থেকে গোপনে চেতনা-নাশক ট্যাবলেট সংগ্রহ করে। সেটি স্পিড ড্রিঙ্কের সঙ্গে মিশিয়ে জিহাদকে খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়ে।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইটালি ইউনিয়নের ইটালি-ইন্দ্রাসন গ্রামের মাঝামাঝি ‘পাজাগাড়ি’ নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে পুরোনো ভ্যানের টায়ারের টিউব দিয়ে জিহাদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশটি বন্যার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর সুলতান নিহতের মোবাইল ফোন নিজের কাছে রাখে এবং সাগর ভ্যানটি ইটালি গ্রামের হাসানের বাড়িতে রেখে আসে।
র্যাবের অভিযানে তাদের দেখানো মতে উদ্ধার করা হয় নিহত জিহাদের মোবাইল ফোন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত টায়ারের টিউব, ব্যাটারিচালিত ভ্যান।
কেকে/এআর