কেশবপুরের মধুকবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের ওপর বাঁশের সাঁকোটি তীব্র স্রোতে আর শ্যাওলার চাপে ভেঙে যায়। এতে সাগরদাঁড়ির সাথে ওপারের সারসা গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে হাজারো পথচারীর পারাপারে দুর্ভোগ দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিনে গিয়ে সাঁকোর শ্যাওলা অপসারণ করে সাকোটি পুণঃসংস্কারের উদ্যোগ নেয়। যা পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করছে।
জানা গেছে, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কেশবপুর ও তালা উপজেলার হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে কপোতাক্ষ নদের ওই বাঁশের সাঁকো। সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি, শেখপুরা, রেজাকাটি, বগা, মহাদেবপুর ও তালা উপজেলার সারসা, সরুলিয়া, সেনেরগাতি, ধানদিয়াসহ ২০/২৫ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন। সাগরদাঁড়িতে রয়েছে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওপার থেকে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ পথচারীদের আত্মীয়ের বাড়িতে যাতায়াতে বাঁশের সাকোটি ব্যবহার করতে হয়।
এ ছাড়া, সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার সাগরদাঁড়িতে হাট বসে। এহাটে ওপারের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বেচাকেনা করে থাকেন। হাটুরে ছাড়াও প্রতিদিন সাগরদাঁড়িতে পর্যটক, দর্শনার্থীদের আগম ঘটে থাকে। একারণেই বাঁশের সাঁকোটির গুরুত্ব অপরিসীম।
সারসা গ্রামের শিক্ষক কৃষ্ণপদ সাহা বলেন, আমি কেশবপুরের বাউশলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রতিদিন যাতায়াতে বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করতে হয়। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে। দুপারের বাসিন্দারা বর্তমান নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে।
সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আহমেদ রাজু বলেন, চলতি বছরের শুরুতে মধুকবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে দুই উপজেলার মানুষের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকোটি পুনঃসংস্কার করা হয়েছিল। উজানের বিপুল পরিমাণের শ্যাওলা সাকোতে আটকে সাঁকোটি আবারো ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দুপারের মানুষ কপোতাক্ষ নদের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন।
সাগরদাঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণে ম্যাপসহ কারিগরি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এরপর সেতু নির্মাণে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের কাটের সাঁকোতে শ্যাওলা বেধে সাঁকোর স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। সাঁকোর অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কেকে/এআর