প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের জেরে মাত্র ১০ দিনে বার্সেলোনা, মাদ্রিদ, লন্ডন, মিলানসহ ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি শহরে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২২ জুন থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে এ মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে।
লন্ডনভিত্তিক দুই প্রতিষ্ঠান ইম্পেরিয়াল কলেজ এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের এক গবেষণাগ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য। খবর রয়টার্সের।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) প্রকাশিত হয়েছে প্রবন্ধটি। সেখানে বলা হয়েছে, যে ২ হাজার ৩০০ জন মারা গেছেন, তাদের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে সরাসরি তাপপ্রবাহের কারণে। এই সংখ্যা অন্তত ১ হাজার ৫০০ জন। বাকিরা আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ তাদের মৃত্যুর অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত জুনের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ইউরোপ জুড়ে বয়ে গেছে ব্যাপক তাপপ্রবাহ। শীতল আবহওয়ার মহাদেশ ইউরোপের বেশিরভাগ অঞ্চলে এই সময়সীমায় তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ইম্পেরিয়াল কলেজের কর্মকর্তা ও গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ড. বেন ক্লার্ক জানিয়েছেন, সাধারণত গ্রীষ্মে ইউরোপে যে তাপমাত্রা থাকে, এবারের গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ছিল তার চেয়ে ৪ ডিগ্রি বা অনেক জায়গায় তার চেয়েও বেশি।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বেন ক্লার্ক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপ উল্লেখযোগ্যভাবে উষ্ণ হয়ে উঠছে এবং গ্রীষ্মকাল ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। গত তিন সপ্তাহের তাপপ্রবাহে ইউরোপে মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ আমাদের এই গবেষণায় শুধু ইউরোপের প্রধান ১২টি শহরকে ফোকাস করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার (৯ জুলাই) মাসিক বুলেটিন প্রকাশ করেছে ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেইঞ্জ সার্ভিস। সেখানে বলা হয়েছে, গত ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের মতো এবারো ‘ইতিহাসের উষ্ণতম’ জুন মাস দেখেছে বিশ্ব।
কোপার্নিকাসের স্ট্র্যাটেজিক বিভাগের প্রধান সামান্থা বার্গেস রয়টার্সকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব যে হারে উষ্ণ হচ্ছে—এই ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে আরো তীব্র তাপপ্রবাহ ঘন ঘন দেখা দেবে ইউরোপে এবং ভুক্তভোগী লোকজনের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে।
কেকে/এএম