জয়পুরহাটে কালাইয়ে চলতি ভরা বর্ষা মৌসুমে নদী,নালা ও খাল বিল জলাশয়ে কাঙ্ক্ষিত পানি নেই। পানির অভাবে দেশি প্রজাতির মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে পানি কম হওয়ায় মাছের প্রজনন কমে গেছে। একই সঙ্গে আগের তুলনায় দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্ত প্রায়। স্থানীয় বাজারে যেসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে তার বেশির ভাগই বিদেশি হাইব্রিড জাতের মাছ। অধিক মুনাফা লাভের আশায় মৎস্য চাষিরা বিদেশি হাইব্রিড জাতের মাছ চাষের দিকে ঝুকছে। দেশে উৎপাদিত রুই,কাতলা,নলা, পাঙ্গাস মাছ যা পাওয়া যায়, তাও প্রাকৃতিক উৎসের নয়। কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় পোনা উৎপাদন করে খামারে চাষ করা।
এ দিকে কয়েকজন মৎস্যচাষী ,জাকির হোসেন, শ্রী উজ্জ্বল মালি, এমদাদুল বলেন, একটা সময় নদী নালা ও খাল বিল,ডোবা থেকে শুরু করে উপজেলার জলাশয়গুলো মৎস্যজীবীরা ইজারা নিয়ে নানা জাতের দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করতেন। এখন বিত্তবানরা এসব ইজারা নিয়ে অধিক মুনাফার জন্য পুকুর ও জলাশয়ে বিদেশি হাইব্রিড জাতের মাছ চাষ করে। বর্তমানে কৃষি জমিতে রাসায়নিক সারও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে নদী,নালাও খাল-বিল, উন্মুক্ত জলাশয়ের স্বচ্ছ পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে দেশি মাছ মরে যাচ্ছে। এ ছাড়া বর্ষার শুরুতে বেড়জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মা মাছগুলো নিধনের ফলেও দেশীয় মাছ বিলপ্ত হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র মাছে ডিম ও পোনা মাছ ধরেও দেশীয় মাছের সংকট সৃষ্টি করছে। এতে প্রায় দেশীয় অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ বিলপ্ত হয়েছে। দেশীয় মাছের বাজার দখল করেছে বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির হাইব্রিড মাছ। ফলে অনেক মৎস্যজীবী বাধ্য হয়ে এই পেশা পরিবর্তন করছেন।
এদিকে কালাই উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,২৬০প্রজাতির দেশি মাছ ছিল। বর্তমানে প্রায় ১০০ প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হওয়ার পথে। বিশেষ করে পুষ্টিগুণসম্পন্ন ভেটকিসহ অনেক দেশি মাছ আর পাওয়া যায় না। অনাবৃষ্টির কারণে নদী ও হাওরে পানির অভাবে দেশীয় মাছের সংকট হচ্ছে। একই সঙ্গে নদী নালা ও খাল বিল জলাশয়ে বিষ প্রয়োগ করে মাছের প্রজনন নষ্ট করা ও বিভিন্ন নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের কারণে দেশি মাছ কমে যায়।
এ বিষয় উপজেলা মৎস কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম বলেন, বর্তমানে সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কাঙ্ক্ষিত পানির অভাবে দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এবং কৃষি জমিতে রাসায়নিক সারও কীটনাশক ব্যবহারে ফলে নদী-নালা,খাল-বিল ও জলাশয়ের স্বচ্ছ পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। ফলে দেশীয় মাছের প্রজনন নষ্ট হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশীয় মাছ সংরক্ষণ, পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা বন্ধে আমরা জেলেসহ সাধারণ মানুষদের সচেতন করছি। এছাড়া নিয়মিত এ অভিযান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
কেকে/এআর