মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রদীপ বৈদ্য (২২) নামের এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএসএফের কাছে বিজিবি কড়া প্রতিবাদ পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে প্রদীপের লাশ দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজিবি। রোববার (১ জুন) গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে জিবি ৪৬ ব্যাটালিয়ান।
বিজিবি ৪৬ ব্যাটালিয়ানের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস নোট থেকে জানা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রদীপ বৈদ্য কুলাউড়া সীমান্ত পিলার ফাঁকি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকোটি জেলার কৈলাশহর থানাধীন দেবীপুর এলাকা দিয়ে ঢুকে। এ সময় ভারতীয় বিএসএফ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই তরুণ নিহত হন। পরে বিএসএফ তার মরদেহ কৈলাশহর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
এ বিষয়টি নিয়ে রোববার সারা দিন এলাকায় গুঞ্জন ওঠে। তবে বিজিবি বিষয়টি প্রথমে জানাতে পারেনি। পরে রোববার বিকালের দিকে এক প্রেস নোট দিয়ে ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়। বিজিবি বলছে, বিষয়টি নিয়ে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আলাপ চলছে। একইসঙ্গে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএসএফের কাছে বিজিবি কড়া প্রতিবাদ পাঠিয়েছে। বিজিবি প্রদীপ বৈদ্যের মরদেহ ফেরত আনতে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে। নিহত প্রদীপ কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের বাসিন্দা শৈলেন্দ্র বৈদ্যর ছেলে। কুলাউড়ার দত্তগ্রাম সীমান্তটি বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের আওতায় পড়েছে।
নিহত যুবক প্রদীপের বড়ভাই জয়ন্ত বৈদ্য বলেন, আমার ভাইকে ভারতীয় বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় গুলি করে হত্যা করেছে। সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি অতিদ্রুত যেন আমার ভাইয়ের মরদেহ আমাদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। নিহত যুবক প্রদীপ বৈদ্যের মরদেহ বর্তমানে ভারতে কৈলাশহর হাসপাতালে রয়েছে বলে কৈলাশহরের গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যার পর থেকে প্রদীপের খোঁজ পাচ্ছিলেন না স্বজনেরা। রোববার সকালে স্থানীয় কিছু লোকের কাছ থেকে পরিবার খবর পায়, বিএসএফ প্রদীপকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। এরপর বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্থানীয় দত্তগ্রাম ক্যাম্পে জানানো হয়। বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রীদীপের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
শরীফপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জয়নুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, প্রদীপের পরিবার জানিয়েছে বিএসএফ প্রদীপকে গুলি করে হত্যার পর তার লাশ ওপারে নিয়ে গেছে। লাশ দেশে আনার জন্য এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে বিজিবি পরামর্শ দিয়েছে। স্বজনেরা থানায় গেছেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম আপছার জানান, বিএসএফের গুলিতে প্রদীপ নিহত এবং তার লাশ ভারতে নিয়ে যাওয়ার খবর তার পরিবারের পক্ষ থেকে পেয়েছি। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানা পুলিশকে এখনো কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, এ ঘটনায় ভারতের বিএসএফ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
কেকে/এএম