গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট চীন মৈত্রী হাসপাতাল স্থাপনের দাবিতে প্রস্তুতিমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার স্বাধীনতা চত্বরে ‘সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় চীন মৈত্রী হাসপাতাল বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, গাইবান্ধা দেশের সবচেয়ে অবহেলিত জেলা। এখানে নেই কোনো কলকারখানা, নেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ। উন্নত চিকিৎসার জন্য এখানকার মানুষকে এখনো রংপুর বা ঢাকায় ছুটতে হয়। অথচ গাইবান্ধায় ১০০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি জমি ও অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রীর অংশ হিসেবে এখানে একটি হাসপাতাল স্থাপন করা হলে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের লাখো মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
তারা আরো বলেন, উত্তরাঞ্চলের বন্যাপ্রবণ এবং চিকিৎসা-সেবায় পিছিয়ে থাকা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একটি আধুনিক, পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন এখন সময়ের দাবি। চীন সরকারের প্রস্তাবিত তিনটি হাসপাতালের মধ্যে একটি সুন্দরগঞ্জে স্থাপন করা হলে গাইবান্ধাসহ কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর লাখো মানুষ উপকৃত হবেন।
বক্তারা আরো জানান, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলনস্থল হরিপুর ইউনিয়নের তিস্তা অববাহিকায় প্রায় ১ হাজার ২০০ বিঘা খাসজমি রয়েছে। সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা ও পরিবেশ বিদ্যমান। এই স্থানে হাসপাতালটি বাস্তবায়িত হলে গাইবান্ধা ছাড়াও কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, জামালপুর এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুন্নবী প্রামাণিক সাজু, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ, পৌর জামায়াতের আমির একরামুল হক, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন পপেল, কঞ্চিবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার আলম সরকার।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণমাধ্যমকর্মী রেজাউল ইসলাম, ব্যবসায়ী নাহিদ আলম রাব্বি লেলিন, তানজিমুল ইসলাম তমাল, মৃন্ময় বসুনিয়া, আবু সাঈদ মোজাহিদ, জিএম সারওয়ার হোসেন, রাজু আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর আলম মিয়া নুর, নাগরিক পার্টির উপজেলা সংগঠক আজিজুর রহমান, এনসিপির সংগঠক আল শাহাদাৎ জামান জিকো, মিনিস্টার প্লাজার সত্ত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার রুবেল মিয়া, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভা শেষে একটি দাবি-সংবলিত প্রস্তাবনা দলিল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা দ্রুতই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দাবির পক্ষে ভবিষ্যতে আরো বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এএম