জুলাই গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেয়া রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে সমন্বয়কদের আটক রেখে মানসিক নির্যাতন করে আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১১ তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে তিনি এসব তথ্য দেন।
সাবেক আইজিপি জানান, ২০১৮-এর নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে ৫০ শতাংশ ভোট ব্যালটবাক্সে ভরে রাখার পরামর্শ দেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। যেসব পুলিশেরা এই দায়িত্ব পালন করে তাদের বিপিএম, পিপিএম রাষ্ট্রীয় পদক দেয়া হয়।
জবানবন্দিতে সাবেক এ আইজিপি আরো জানান, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর পুলিশের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়। গোপালগঞ্জ বেল্টের পুলিশ অফিসাররা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে থাকে পুলিশ। সিনিয়র অফিসারদের পক্ষে এগুলো কন্ট্রোল করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনকি ২০২৩ সালে তার অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও গ্রুপিং এড়াতে আইজি থাকার মেয়াদকাল বৃদ্ধি করে সরকার বলে জানান তিনি।
এর আগে, জুলাই আন্দোলনে আহত, চিকিৎসক, ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী এবং শহিদদের পরিবারের সদস্যরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের সাক্ষ্যে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলি চালানো, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো, মরদেহ পোড়ানোসহ শেখ হাসিনার গুলি চালানোর নির্দেশের বিস্তারিত বর্ণনা উঠে আসে।
ট্রাইব্যুনালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে আরও আসামি করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল আল মামুনকে।
এর মধ্যে আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হিসেবেও সাক্ষ্য দেবেন। প্রতিদিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলায় নিজের সব অপরাধের দায় স্বীকার করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
কেকে/ এমএস