শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ জাগরণ মাদক-কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। কিশোর গ্যাং, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়তে মোহাম্মদপুর ও আদাবরের শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা, সম্পাদক ও রাজনীতিবিদসহ পেশাজীবীরা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুরের এলাকায় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
বক্তৃতাকালের অতিথিরা জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় কিশোর গ্যাং, মাদক কারবার ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধ প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কিশোর বয়সীদের বিপথগামী হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সকালে সামাজিক সংগঠন আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অন্তত ৭০টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার সামনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মাদক নয়, স্বপ্ন চাই, যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’ কিশোর গ্যাং নয়, গড়বো ন্যায়নির্ভর সমাজ’—এমন নানা প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা দাঁড়ায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রতিবাদ করেন।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে শুরু হয়ে নূরজাহান রোড, টাউন হল হয়ে তাজমহল রোড পর্যন্ত একটি বিশাল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
এই র্যালিতে মোহাম্মদপুর-আদাবর সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ব্যানারে অংশ নেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী।
এসময় জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার, প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মোহাম্মদপুর নিয়ে মানুষের মনে একটা নেতিবাচক চিত্র তৈরি হয়েছে। অথচ এখানে অসংখ্য গুণী শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছেন। আজকের এই গণজাগরণ বলে দেয়, বাংলাদেশ বদলাতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যদি রাস্তায় নামে, পরিবর্তন অনিবার্য।
তিনি আরো বলেন, এই শিক্ষার্থীরাই গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। মাদক, কিশোর গ্যাং, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের এই প্রতিবাদ একদিন ঐতিহাসিক উদাহরণ হয়ে থাকবে। সমাজকে বদলে দিতে হবে। আর নয় কিশোর গ্যাং, মাদক।
বিশেষ অতিথি প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটা সমাজ রক্ষার আন্দোলন। মোহাম্মদপুরকে সন্ত্রাস ও মাদকের অভয়ারণ্য থেকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ওয়ালী উল্লাহ বলেন, মোহাম্মদপুর-আদাবরের শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ ইনশা-আল্লাহ মোহাম্মদপুর আদাবরের সকল অন্যায় দূর হবে।
আন্দোলনের মূল সংগঠক ও আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান বলেন, যেখানে রাজনীতি অনেক সময় ব্যর্থ, সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একসাথে হলে সমাজে সত্যিকারের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই সমাজ বদলে যাবে। মোহাম্মদপুর-আদাবর এই পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে।
কেকে/এআর