ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন, কোনো তালবাহানা নয়, আওয়ামী লীগকে চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাহী আদেশে নয়, সংবিধান সংশোধন করে স্বৈরাচারী, খুনি, হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে শুধু নিষিদ্ধ নয় দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে কোনো দল বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসে স্বৈরাচারীর পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে পারে এবং আওয়ামী লীগকেও রাজনীতি করার সুযোগ না দেয়।
শনিবার (১০ মে) বেলা ৩টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গণহত্যাকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, মুফতি সৈয়দ এসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, হাজী আনোয়ার, এম এইচ মোস্তফা, মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা কে এম শরিয়ত উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, নুরুজ্জামান সরকার, মুফতি মো. মাছউদুর রহমান, যুবনেতা মুফতী মানসুর আহমাদ সাকী, ছাত্রনেতা মুনতাছির আহমাদ, মুফতি নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
মাওলানা ইউনুছ আহমদ আরো বলেন, যারা জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারের পতনে কোনোরকম ভূমিকা পালন করেনি, তারা আজ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় না। বরং আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের অন্যায়কে ঢেকে তাদেরকে পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতা করছে। মানবিক করিডরের নামে মিয়ানমারকে করিডোর দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ফিরে আসতে হবে। মানবিক করিডোরে নামে পার্বত্য অঞ্চলকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার যেকোনো ষড়যন্ত্র এদেশের মানুষ রুখে দেবে। কোনোরকম বাহানা ছাড়াই নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে।
সমাবেশে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, এই সরকারকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছি আমরা। ৫ আগস্টেই তো ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এখন বাকি শুধু গ্যাজেট প্রকাশ করা। এটা করার জন্য আপনারা এত সময় ক্ষেপণ, তালবাহানা করছেন কেন? আজ নয় মাস পর কেন আমরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে নিষিদ্ধ করার জন্য আবার মাঠে নামতে হলো? উপদেষ্টাদের তাহলে কাজ কী? জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করেই সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের পূর্বে ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাদেরকে মাঠে রেখে নির্বাচন করলে নির্বাচনে সহিংসতা ঘটবে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, এখনই সময় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সাথে সাথে সেনাপ্রধানের অপসারণ, চুন্নুর পদত্যাগ, আসিফ নজরুলের পদত্যাগ, সংবিধান বাতিল ও ‘র’ এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বিগত ১৭ বছর যারা আওয়ামী লীগকে অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, দখলদারি, চুরি, ছিনতাই, লুটতরাজ, হাট, মাঠ-ঘাট দখল, সিন্ডিকেট, টাকা পাচার করতে প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা দিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এখনো যারা স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের পালাতে সহায়তা করছে তাদের বিচারও স্বৈরাচারের মতোই হবে।
সমাবেশ শেষে অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমেদের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষের এক বিশাল গণমিছিল নিয়ে শাহবাগে গিয়ে যুক্ত হয়।
কেকে/ এমএস