ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার না হলে আবারো ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এ লক্ষ্যে জুলাই অভ্যুত্থানকালীন সময়ের মতো জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজধানী উত্তরের ভাটারাস্থ আস-সাঈদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দায়িত্বশীল তারবিয়ত-২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালীন গণহত্যা, শাপলা চত্ত্বরে গণহত্যা, পিলখানায় বিডিআর হত্যাসহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে। মৌলিক সংস্কারের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রনয়ন করে স্থানীয় নির্বাচনের পর জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে। অন্যের শক্তিতে নয়; নিজেরা শক্তি সঞ্চয় করব। সবচেয়ে চমৎকার ভাবমূর্তি এখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের। ইসলামী আন্দোলনকে মানুষ ভালোবাসে। তাদের সেই ভালোবাসাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে নির্বাচনী শক্তিতে পরিণত করতে হবে। নারী-পুরুষ সবার মাঝে দাওয়াতি কাজ করে ভোট ব্যাংক তৈরি করতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকি।
আরো বক্তব্য রাখেন আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, মাওলানা নুরুল ইসলাম নাঈম, ইন্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মোস্তফা আল মামুন মনির, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মুফতী মো. মাছউদুর রহমান, মুফতী নিজাম উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার (অব.) আমিনুল হক তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, মুফতী হাবিবুল্লাহ, রাকিবুল ইসলাম, আবদুল কুদ্দুস রশিদ প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতী দেলোয়ার হোসাইন সাকী বলেন, বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ অনুকুল পরিবেশকে কাজে লাগাতে হবে। ভারতীয় মুসলমানদের সম্পদ লুট ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভারতের মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল করতে হবে। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্য শেখ ফজলে বারি মাসউদ বলেন, ইসলামকে নারী সমাজের প্রতিপক্ষ ও রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করানোর পাঁয়তারা করছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। নীতি-আদর্শ বিবর্জিত সমাজ-বিধ্বংসী একটি চক্র সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরোধী সংস্কার প্রস্তাবনা পেশ করেছে। যা মূলত, আবহমানকাল ধরে চলে আসা এদেশের পারিবারিক কাঠামো ও ঐতিহ্যকে ভেঙে চুরমার করে ফেলার পুরোনো উদ্দেশ্য। অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ বিলুপ্তি ও এর প্রতিবেদন বাতিল করতে হবে।
কেকে/এএম