ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হাজার কোটি টাকার সার লোপাটে বিএডিসির ১০ কর্মকর্তাকে তলব

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৪:২৮ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২৪

হাজার কোটি টাকার সার লোপাটে বিএডিসির ১০ কর্মকর্তাকে তলব

নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের মালিক কামরুল আশরাফ খান ওরফে পোটনের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭১ টন সার লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ১০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো পৃথক চিঠিতে তাদের তলব করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের ২ ও ৩ জুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তলব করা কর্মকর্তাদের মধ্যে বিএডিসির সহকারী ব্যবস্থাপক (পরিবহন) দিপক কুমার, খুলনা অফিসে কর্মরত যুগ্ম-পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান, সহকারী পরিচালক শরিফ শফিউল আলম গাজ্জালী, নুরুজ্জামান ও আবুল কাশেম রয়েছেন। তাদের আগামী ২ জুন জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক।

অন্যদিকে ৩ জুন যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে তারা হলেন, বিএডিসির সাবেক চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ ও অমিত সরকার, পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মহাব্যবস্থাপক (সার ব্যবস্থাপনা) আব্দুল হালিম ও মো. ইব্রাহীম হোসেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে আমদানি করা ওই সার বন্দর থেকে খালাসের পর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) গুদামে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তা পৌঁছায়নি। পোটন ট্রেডার্সের মালিক কামরুল আশরাফ খান (পোটন) সাবেক সংসদ সদস্য ও সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। তার বিরুদ্ধে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিএডিসির বিদেশ থেকে আমদানি করা ১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের এমপিও, টিএসপি ও ডিএপি এ তিন ধরনের ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭১ টন সার আত্মসাতের অভিযোগ জমা হয়। অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর তিন সদস্যের টিম গঠন করে দুদক।

অন্যদিকে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর প্রায় ৫৮২ কোটি টাকার সরকারি সার সরবরাহ না করে আত্মসাতের অভিযোগে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খানসহ (পোটন) পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলার আসামিরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের মালিক ও সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান (পোটন), ওই প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন (নিপু) ও মো. নাজমুল আলম (বাদল), পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং প্রতিনিধি (খুলনা ও নওয়াপাড়া) মো. আতাউর রহমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বিদেশ হতে ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য আমদানি করলেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তিকৃত বাফার গুদামে না দিয়ে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার ৭১ হাজার ৮০১ টন ৩১ কেজি সার আত্মসাৎ করেন। কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের ৫০ দিনের মধ্যে সার গুদামে পৌঁছে দেওয়া কথা ছিল। সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি মেসার্স পোটন ট্রেডার্স এবং প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহ দেওয়ার জন্য মোট ১৩টি স্থানীয় পরিবহন চুক্তি সই হয়। যার মধ্যে ৩৭টি চুক্তির অধীনে আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭.৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হলেও ৭১ হাজার ৮০১ টাকা ৩১ কেজি ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন।

 
Electronic Paper