ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আরসার আস্তানা থেকে অস্ত্রসহ কমান্ডার গ্রেফতার

‌কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া
🕐 ৭:১৯ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৪

আরসার আস্তানা থেকে অস্ত্রসহ কমান্ডার গ্রেফতার

কক্সবাজারের উখিয়ায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (ল' এন্ড মিডিয়া)অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী বুধবার বিকেলে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার (১৫ মে) উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২০ এক্সটেনশনের পাশের ক্যাম্পসংলগ্ন লাল পাহাড়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এ অভিযান পরিচালনা করে।

গ্রেফতারকৃত আরসার সন্ত্রাসীরা হলেন, ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দুল আবেরার ছেলে মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম (৩৮), ৮ নম্বর ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৩/এ ব্লকের মৃত মোহাম্মদ নুর এর ছেলে মোঃ রিয়াজ (২৭)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরী হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ৯ রাউন্ড ৯এমএম পিস্তলের এ্যামুনিশন, ১টি এলজি ও ০৩টি ১২ বোর কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে র‍্যাবের অভিযানে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি এবং রকেট সেল সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধ্বংস করেছে ।

তিনি জানান,লাল পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র‍্যাবের গুলি বিনিময় হয়। অভিযানের একপর্যায়ে মাস্টার সলিমুল্লাহ ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বেশকিছু দিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিসহ কয়েক রোহিঙ্গাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব ক্যাম্পে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়ার ক্যাম্পসংলগ্ন গহিন পাহাড়ে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার আস্তানা অবস্থান শনাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এরপর র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ পুনরায় গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী শুরু করে। পার্শ্ববর্তী দেশে সৃষ্ট সংঘর্ষকে কাজে লাগিয়ে আরসাসহ সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কিছু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসার একটি তথ্য র‌্যাবের নিকট আসে। এছাড়াও আরসা নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়ায় পুনরায় সংগঠিত হওয়ার লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কিছু নেতৃপর্যায়ে আরসা সদস্যকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়েছে বলে তথ্য পায় র‌্যাব।

প্রাপ্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ কার্যক্রম শুরু করে এবং জানতে পারে, মাস্টার সেলিম বর্তমানে বাংলাদেশের আরসার প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার নেতৃত্বে পুনরায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাশ সৃষ্টি করছে।

উল্লেখ,রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালে অদ্যাবধি পর্যন্ত ১৬ জন নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে।এছাড়াও আরসা প্রধান নেতা আতাউল্লাহর দেহরক্ষী আকিজ’সহ এপর্যন্ত ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের কাছ থেকে ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আরসা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 
Electronic Paper