জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল জরুরি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
🕐 ৮:৪১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল নিশ্চিতকরণ জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত ‘সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল : অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সাংবাদিক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এই কর্মশালার আয়োজন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, নন-ফুড গ্রেডেড উপকরণে তৈরি কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য পণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত ড্রাম ভোজ্যতেল পরিবহনে ব্যবহার করা হয়। তাই ড্রামে বাজারজাতকৃত খোলা ভোজ্যতেল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ভেজাল মেশানোর সুযোগ থাকে। এ ছাড়া এসব পুরাতন ড্রামে কোনো প্রকার লেবেল এবং উৎস শনাক্তকরণ তথ্য যুক্ত না করায় তেল সরবরাহের উৎস চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না। যা আইনের কার্যকর বাস্তবায়নেও বাধা সৃষ্টি করে। অস্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেল মানুষের মধ্যে নানা ধরনের অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
কর্মশালায় জানানো হয়, ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ দণ্ডনীয় অপরাধ এবং একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো উপকরণ দিয়ে তৈরি প্যাকেটে বা পাত্রে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত ২০১৭ সালের গবেষণা অনুযায়ী, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশ ড্রামে বাজারজাত করা হয়, যার ৫৯ শতাংশই ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ নয় এবং ৩৪ শতাংশে সঠিকমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ নেই। মাত্র ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া গেছে।
বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে হবে। ড্রামে বাজারজাতকৃত ভোজ্যতেলের ক্ষতিকর দিকগুলো চিহ্নিত করে শিল্প মন্ত্রণালয় এক নির্বাহী আদেশে জুলাই ২০২২ এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর ২০২২ এর পর থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেছে। তবে এই নির্দেশনার কার্যকর বাস্তবায়ন এখনো দেখা যায়নি।
ভোজ্যতেল খাদ্যপণ্য বিধায় এটি নিরাপদভাবে (প্যাকেজিং, মোড়কাবদ্ধভাবে) ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে সংশ্লিষ্ট নিরাপদ খাদ্য আইন, বিএসটিআই আইন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা প্রভৃতির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে একযোগে কাজ করতে হবে।
কর্মশালায় বিএসটিআইর ডেপুটি ডিরেক্টর (সিএম) রিয়াজুল হক, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)-এর লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন প্রোগ্রামের পোর্টফোলিও লিড আশেক মাহফুজ, বাংলা ট্রিবিউনের বিজনেস ইন-চার্জ সাংবাদিক মো. শফিকুল ইসলাম, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কনসালটেন্ট মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রীনা রাণী পাল ও কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।