চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকায় ‘বাক্করগিয়া কাটা’ নামের পাহাড়টি প্রায় আট একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। এদিকে বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড়টি রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে তিন কিলোমিটার উত্তরে বার আউলিয়া গেট। সেখান থেকে বার আউলিয়া সড়ক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছয় কিলোমিটার এগোলেই চরম্বা দিঘির কোণ। ওই এলাকা থেকে দিঘিরপাড়া সড়ক ধরে দুই কিলোমিটার উত্তরে কালোয়ারপাড়া এলাকায় দেখা মেলে বাক্করগিয়া কাটা পাহাড়টির।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার স্পষ্ট চিহ্ন। কাটা মাটি এক স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাহাড়টি ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং মালিকানা সাতজনের। পাঁচ বছর আগে বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটা শুরু হয়। এ পর্যন্ত পাহাড়ের পূর্ব পাশে আটটি বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ অংশের প্রায় ১৫ শতক ইতোমধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ অংশে যেখান থেকে মাটি কাটা হচ্ছে সেটির মালিক স্থানীয় মো. শফি। তিনি এক বছর আগে একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটা শুরু করেন। এখনও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। তার দুই ছেলে প্রবাসে থাকায় তাদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণে নতুন করে ছয় দিন ধরে পাহাড় কাটা হচ্ছে।
মো. শফি পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, “পাহাড় কাটলে প্রশাসন সমস্যা করে, সেটি জানি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন স্কুলের মাঠের জন্য মাটি কাটলে কোনো সমস্যা হবে না। তাই চেয়ারম্যান কথায় মাটি কাটতে দিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু মাটি স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, আরও ১০০ ট্রাক মাটি লাগবে।”
তবে চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘আমি কাউকে পাহাড় কাটার কথা বলিনি। মো. শফি নামে কাউকে চিনিও না।’
এদিকে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুযায়ী, জাতীয় স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া পাহাড় বা টিলা কাটা নিষিদ্ধ।
লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন বলেন, “কোনোভাবেই পাহাড় কাটা যাবে না। দ্রুত অভিযান চালিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “পাহাড় কাটার বিষয়ে যদি কোন তথ্য থাকে, যদি দেখা যায় যে এখানে আইনের কোন ব্যর্তয় ঘটেছে, তাহলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কেকে/ আরআই