বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। এর মধ্যে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কৃষি ও খাদ্য সম্মেলন করবে বিএজেএফ।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বিএজেএফের সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএজেএফ এখন পর্যন্ত কৃষি সাংবাদিকতা, কৃষকের অধিকার ও খাদ্যনীতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের কোনো সাংবাদিক সংগঠনের এমন বৃহৎ কর্মসূচি আগে আয়োজন হয়নি। বিএজেএফ বাংলাদেশের একমাত্র সাংবাদিক সংগঠন, যারা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাগ্রিকালচারাল জার্নালিস্টসের (আইএফএএজে) সদস্যভুক্ত। ২৫ দিনব্যাপী কর্মসূচির মূল আয়োজন হিসেবে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হবে। ছয়টি সেশনে অনুষ্ঠিত এসব আয়োজনে মূল থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’।’
সাইদ শাহীন আরও বলেন, ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ঘাটতি বহু দিনের। আমরা রাজনীতিবিদদের সংশোধন করতে পারব কি না জানি না, তবে কোথায় পরিবর্তন প্রয়োজন—তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরব। তাছাড়া অনুষ্ঠানের প্রতিটি সেশনে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতা এবং বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিরা যোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন।’
‘সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হিসেবে বিএজেএফ দেশের প্রথম কোনো উপজেলাকে ভেজাল ও নকলমুক্ত কৃষি উপকরণ এলাকা ঘোষণা করার প্রক্রিয়া শুরু করবে। ভেজাল ও নকল কৃষি উপকরণ থেকে কৃষক ক্ষতির শিকার হলেও কোনো জায়গা এখন পর্যন্ত নকলমুক্ত ঘোষিত হয়নি। আমরা সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চাই।’
এ ছাড়া দেশের ছয়টি ভৌগোলিক অঞ্চলে সাংবাদিকরা সরাসরি কৃষকের ক্ষেতে গিয়ে তাদের বক্তব্য শুনবেন—এ উদ্যোগকে ‘কৃষকের দুয়ারে সাংবাদিক’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদ বলেন, ‘কোনো সম্মেলন সফল করতে হলে সংশ্লিষ্ট খাতের সব স্টেকহোল্ডারের উপস্থিতি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই দর্শন থেকেই আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কাঠামো সাজিয়েছি। কৃষির তিনটি বড় খাত—ফসল, মৎস্য-প্রাণিসম্পদ ও খাদ্য—এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে আমরা তিন দিনের কর্মসূচি নির্ধারণ করেছি।’
‘প্রতিটি সেশন এ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোক্তা, খামারি, নীতিনির্ধারকসহ সব পক্ষ যেন এক মঞ্চে মতামত তুলে ধরতে পারেন সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষিকে কেন্দ্র করে এমন বিস্তৃত অংশগ্রহণের আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন এ দেশে এই প্রথম হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হয়েও কৃষি ও কৃষককে এখনো অবহেলার অভিযোগ শোনা যায়। কৃষকের ন্যায্য দাম না পাওয়া, মূল্যচক্রের সমস্যা, উপকরণের সংকটসহ অনেক বিষয় এই সম্মেলনে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনেনর সহসভাপতি ইয়াছির ওয়ারদাদ ও আ ন ম মহিবুব উজ জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক তুহিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ হোসেন ও আফসানা মিমি, অনুষ্ঠানবিষয়ক সম্পাদক সালেহ মোহাম্মদ রশিদ অলক, প্রকাশনা সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর ছিলেন।
কেকে/এমএ